OrdinaryITPostAd

টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - টমেটো খেলে কি গ্যাস হয়

 টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - টমেটো খেলে কি গ্যাস হয়

টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। টমেটো একটি শীতকালীন সবজি। টমেটোতে অনেকে ফল হিসাবেই বেশি চিনে। তবে বাংলাদেশের বাজারে টমেটো সবজি হিসাবেই পাওয়া যায়। তবে টমেটোতে ভিটামিনের পরিমাণ বেশি বলে টমেটো তে উপকারিতা অনেক বেশি থাকে তবে কিছু ক্ষেত্রে অপকারিতা আছে। আবার টমেটো খেলে গ্যাস হয় বেশি।

টমেটো একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি। যেকোনো তরকারিতে বা সালাদ হিসাবে খেলেও এর সাধের মাত্রা অনেক গুণ বেড়ে যায়। তবে টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা দুই আছে। তবে প্রযুক্তির প্রভাবে বর্তমানে সারা বছরই টমেটো পাওয়া যায়। তবে আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে টমেটোর উপকারিতা অপকারিতা ও বিভিন্ন গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

টমেটোর পুষ্টিগুণ ও উপাদান

টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন- সি, ভিটামিন- কে, ফলিক এসিড লাইকোপিন, ক্রোমিয়াম আরোও গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। টমেটো আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শীতকালীন সবজি। বর্তমানে সারা বছরই এই সবজি পাওয়া যায়।

সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর চাহিদা সারাদেশে। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি চাষীদের জন্য এটি একটি বড় অর্থকারী সবজি হিসাবে পরিচিত।

সবজি হিসাবে এর ব্যবহার ছাড়াও শিল্পকরণের বিভিন্ন ব্যবহারের মাধ্যমে টমেটোবেশ পরিচিত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ও বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর অর্থ উপার্জিত হচ্ছে এই টমেটো থেকে। রান্নার উপকরণ হিসেবে এবং টমেটো সস হিসেবে খাবারের সাথে খুবই জনপ্রিয় এই টমেটো।

সর্বত্রই খুবই জনপ্রিয় এ টমেটো খাবারের স্বাদ, উচ্চমান পুষ্টি প্রদান, এবং আকর্ষণীয়তা বৃদ্ধিতে টমেটোর বিকল্প পাওয়া যাবে না। এ জনপ্রিয় সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায়। 

টমেটোতে লাইকোপেন নামক যে উপাদানটি রয়েছে যা ফুসফুস, ক্যান্সা্‌র, অগ্নাশয়, পাকস্থলী, মূত্রাশয় ইত্যাদি দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে টমেটো জটিল কোন সমস্যার একেবারে নিরাময় করতে পারে না। কিছুটা সুস্থ রাখতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, সপ্তাহে ৭-১০ কাপ টমেটো খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। আর পরিমিত তেল দিয়ে টমেটো রান্না করা গেলে এর উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায় এই টমেটো।

টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

টমেটো উপকারিতা অনেক যা আমরা এই অল্প পরিসরে বলে শেষ করতে পারবো না। টমেটো একটি সবজি যা যা খুব সহজেই পাওয়া যায়। কিন্তু এর পুষ্টি উপাদান শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে এটি গুরুতর কোন রোগ নিরাময়ের জন্য না। এটি শুধুমাত্র কিছু পরিমাণ রোগের উপসর্গ কমাতে পারে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে পারে। আজকে টমেটোর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হলো-

দাঁত ও হাড়ের জন্যঃ দাঁত ও হাড়কে সুস্থ রাখতে টমেটোর গুরুত্ব অপরিহার্য । টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন আছে যা হাড়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে যা দাঁত ও হাড়কে সুস্থ রাখতে পারে। 

শরীরের 99 % ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়কে গঠন করতে কাজে লাগে। সে ক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড় গঠনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাহলে এটা বলা যায় যে শরীরর দাঁত ও হাড় গঠনে টমেটো খাওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

চোখের সমস্যার ক্ষেত্রেঃ টমেটো খাওয়া চোখের সমস্যার জন্য খুবই উপকারী। টমেটোতে থাকা ভিটামিন সি চোখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চোখের ক্ষেত্রে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে ভিটামিন সি চোখের কোষ কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও টমেটো চোখেকে রোগ মুক্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ওজন কমানোর ক্ষেত্রেঃ টমেটো রস খাওয়া শরীরের ওজন ও চর্বি কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা ওজন কমাতে ভালো কাজ করে। যেহেতু টমেটোতে থাকা ফাইবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। সে ক্ষেত্রে টমেটো রস খাওয়া সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

ডায়াবেটিসের জন্যঃ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে টমেটো একটি উপকারী সবজি। টমেটোর মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলো শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

এছাড়াও টমেটো রসে লাইকোপিন, বিটা-ক্যারোটিন, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েড, ফোলেট রয়েছে এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ যা টাইপ 2 ডায়াবেটিসের অগ্রগতি রোধ করতে পারে। সেক্ষেত্রে বলা যায় ডায়াবেটিসের রোগীর ক্ষেত্রে টমেটো গুরুত্ব রয়েছে।

ক্যান্সারের ক্ষেত্রেঃ লাল টমেটোতে লাইকোপিন থাকে যা ক্যারিটোনয়েড সমৃদ্ধ। এই যৌগটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ক্রমপ্রিভেনটিভ হিসাবে কাজ করে। লাইকোপিনে এন্টি -অক্সিডেন্ট এবং এন্টি-কাসিনজেনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা, ক্যান্সারকে বাড়তে বাধা দিতে পারে। এক্ষেত্রে বলা যায় ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা আছে।

কিন্তু এ কথা বলা যায় যে, ক্যান্সারের মত মরণব্যাধি অসুখ ঘরোয়া উপায়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এর জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসার প্রয়োজন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ  টমেটোর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। টমেটোতে থাকা লাইকোপিন, বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন ই এর মত অনেক ক্যারিটোনয়েড রয়েছে। টমেটোর মধ্যে থাকা এইসব উপাদান কার্যকরী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এবং শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে টমেটো উপকারিতা আছে।

প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণেঃ প্রদাহ জনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে টমেটো ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ টমেটোতে থাকা যে সকল উপাদান যেমন লাইকোপিন, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন ই ক্যারিটোনয়েড ইত্যাদি যৌগ প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় টমেটো গুরুত্বঃ টমেটোতে যে পরিমাণ উপাদান রয়েছে গর্ভাবস্থায় এগুলো অনেক বেশি উপকার করে। টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট থাকে যা অনাগত ভ্রূন কে নিউরাল টিউবের এবং মেরুদন্ডের ও মস্তিষ্ক সম্পর্কিত রোগ থেকে রক্ষা করে। এটি বলা যায় যে, গর্ভাবস্থায় টমেটো সকল উপাদানগুলো গর্ভবতী মা ও বাচ্চা দুজনেরই অনেক উপকার করে।

ব্যথা উপশমকারীঃ টমেটোর মধ্যে থাকা উপাদানগুলো ব্যথা উপশম করতে খুবই উপকারী। টমেটোর মধ্যে থাকা উপাদান যেমন ফ্ল্যাভোনয়েট ব্যথা উপশমের জন্য ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে এই উপাদানটির জন্যই ব্যথা উপশমের টমেটো ভালো কাজ করে।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেঃ বৈজ্ঞানিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, হৃদরোগের ঝুকি কমাতে টমেটো উপকারিতা আছে। টমেটোতে থাকা যে সকল উপাদান যেমন লাইকোপিন, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েট ইত্যাদি শরীরের উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আর কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকলে হৃদরোগের ঝুকি কম থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ টমেটো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। টমেটো থাকা ক্যারোটিন এন্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে টমেটো অনেক উপকার করে।

রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়ঃ টমেটো রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। টমেটোতে থাকা লাইকোপিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। ফলে শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে।

পেশি তৈরিতে সহায়তা করেঃ টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ গুলোর মধ্যে একটি। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার শরীরের পেশি তৈরিতে সহায়তা করে। টমেটো এবং টমেটো থেকে তৈরি টমেটো রস সমৃদ্ধ খাবার শরীরে বেশি গঠনে সাহায্য করে।

টমেটো হজমে সহায়তা করেঃ হজমে সমস্যায় টমেটো খুবই উপকার করে।NCBI-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, টমেটোতে থাকা লাইকোপিন পরিপাকতন্ত্রের সহায়তা করে। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটোকে ক্লোরাইডের একটি ভালো উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যা পাকস্থলীর অপরিহার্য অঙ্গ, যেটা পাকস্থলীর তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

লিভারের সুরক্ষায়ঃ টমেটোতে উপস্থিত লাইকোপিন অ্যালকোহল যুক্ত লিভারের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, টমেটো খাওয়ার মাধ্যমে লিভারের ক্যান্সার ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়। টমেটো এবং টমেটো রসের উপকারিতা লিভারের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে।

সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়া ভালো। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি বা দুইটা টমেটো খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে। একটি বা দুইটি টমেটো খেলে রক্তস্বল্পতা পূরণের সহায়তা করে। আবার সর্দি কাশি সমস্যা কমে। টমেটো শীতকালীন একটি সবজি। আমরা তরকারি বা সালাদ ও বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাত করে টমেটো খেতে পারি।


প্রতিদিন নিয়মিত সকালে টমেটো খেলে ওজন বৃদ্ধি কমতে সাহায্য করে। টমেটোতে থাকা উপাদান লাইকোপিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, ইত্যাদি উপাদান শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরের ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ফলে হাড় ক্ষয় রোধ করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়া খুবই উপকারী।

আবার সকালে খালি পেটে নিয়মিত টমেটো খেলে পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে। লিভার ভালো থাকে। পেটে কোন সমস্যা থাকে না। পেট পরিষ্কার থাকে ফলে সারাদিন মন প্রফুল্ল থাকে। যা একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়া অবশ্যই স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। কিন্তু গর্ভাবস্থায় মনে রাখতে হবে যে সকল খাবারই পরিমিত খেতে হবে। টমেটোতে থাকা লাইকোপিন, ক্যালসিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই সকল উপাদান গর্ভবতী মা ও বাচ্চার জন্য খুবই উপকারী। টমেটোর মধ্যে থাকা এই উপাদানগুলো বাচ্চা দেহের মস্তিষ্ক ও হাড় গঠনে সাহায্য করে।

এছাড়াও এ সময় গর্ভবতীর রক্তস্বল্পতা রোধে খুবই সচেতন থাকতে হয়। এই খাবারে যে সকল উপাদান রয়েছে এগুলো গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা পূরণে সহায়তা করে। গর্ভবতী মা ও বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 

টমেটোতে থাকা ক্যালোরি গর্ভবতী মায়ের ক্লান্তিবোধ দূর করে। শরীরে ক্যালরি চাহিদা পূরণ করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-
  • টমেটোতে এসিডি থাকে ফলে অম্বল হতে পারে। 
  •  বদহজম, পেটে ব্যথা ও গ্যাস হতে পারে।
  •  গর্ভবতী মহিলা বা গর্ভস্থ বাচ্চার গায়ের রং পরিবর্তন হতে পারে।
তবে গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী টমেটো খেতে হবে।

কাঁচা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের দেশে সহজলভ্য শাকসবজির মধ্যে টমেটো অন্যতম। তবে কাঁচা টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ আছে। যা  শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। রান্নায় এর স্বাদ আরো অনেকটা বেড়ে যায়। কাঁচা টমেটো সালাদ করেও খাওয়া যায়।

এক কাপ বা ২৪০ গ্রাম কাঁচা টমেটোতে আছে প্রায় ১৫ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন কে এবং ৪৫ মিলিগ্রাম  খনিজ ফসফেট। এই দুটো বাতের ব্যথা ও হাড় ক্ষয় রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কাঁচা টমেটোতে ভিটামিন ই ও সি এর পরিমাণ বেশি থাকে। সবুজ টমেটোতে লাল টমেটোর চেয়ে ভিটামিন সি এর পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে শরীরে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

কাঁচা টমেটোতে আরোও থাকে কিউমেরিক ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড। কারসিনোজের প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে ক্যান্সার রোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এমনকি যারা কিছুতেই ধূমপান ছাড়তে পারছেন না, তারা অবশ্যই নিয়মিত কাঁচা টমেটো খেলে ধূমপানে আসক্তি কমতে থাকবে।

লাল টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

টমেটোতে রয়েছে লাইকোপিন নামক উপাদান যা শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তৈরি করে। আবার লাল টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন আছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বর্তমানে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য টমেটো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লাইকোপিন উপাদানটি শরীরের স্ট্রেস কে প্রশমিত করে।


এছাড়াও লাল টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন নিয়মিত লাল টমেটো খেলে হজমে সমস্যা হয় না। লিভার ও পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সহজলভ্য এই সবজি আমাদের অনেক উপকার করে।

টমেটো খাওয়ার নিয়ম

টমেটো পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। ছোট বড় সকলে নানাভাবে টমেটো খেয়ে থাকে। টমেটো শীতকালীন একটি সবজি। তবে বর্তমানে সারা বছরই এই সবজি পাওয়া যায়। অনেকে সবজি হিসেবে আবার অনেকে ফল হিসাবে খেয়ে থাকে। শীতকালে এর খাবারের স্বাদ অনেক বেশি বেড়ে যায়।

টমেটো অন্য সবজির সাথে রান্না করে খেতে বেশি স্বাদ লাগে। আবার অনেকে ভাতের সাথে সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকে। বিভিন্ন ভাবে টমেটো খাওয়া যায়। বাচ্চারা অনেক সময় টমেটো সাথে লবণ দিয়ে খেতে পছন্দ করে।

বর্তমানে টমেটো প্রক্রিয়াজাত করে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। যেমন টমেটো সস বিভিন্ন রান্না আবার সকল প্রকার খাবারের সাথে সস হিসাবে খেতে অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সকল রেস্টুরেন্ট গুলোতে টমেটো সস ছাড়া কোন কিছু ভাবাই যায় না। তাই আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারে টমেটোর গুরুত্ব অপরিসীম।

টমেটো খেলে কি গ্যাস হয়

গ্যাস বা অম্বল আমরা যাই বলি না কেন কোন কিছু সঠিক সময়ে বা পরিমিতা না খেলে সেটার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন অতিরিক্ত টমেটো খেলেও গ্যাসের পরিমাণ বাড়তে পারে। যাদের এসিডিটির পরিমাণ বেশি তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী টমেটো খাওয়া উচিত। অনেক সময় অসময়ে টমেটো খেলেও বদহজম বা গ্যাস বেড়ে যেতে পারে। ফলে পেটে ব্যথা সহ নানা জটিল সমস্যা হতে পারে। 

তাই, যাদের সমস্যা আছে তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

টমেটো খাওয়ার অপকারিতা

টমেটোর উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণে টমেটো খেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই টমেটো খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। যদিও টমেটোতে এলার্জি সমস্যা নাই, তবে শ্বাস প্রশ্বাসের এলার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যারা হৃদরোগের রোগী তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

আবার যারা কিডনি রোগী তারাও অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। তাছাড়া টমেটোতে তেমন কোনো বিধি নিষেধ নাই। সকল ধরনের মানুষই টমেটো খেতে পারে। তবে সবকিছুই পরিমিত খাওয়া উচিত।

পরিশেষে

টমেটো আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সবজি বা ফল। আমরা সহজেই হাতের কাছে এই সবজি পেয়ে থাকি। আমরা এই পোস্টে মাধ্যমে টমেটোর উপকারিতা অপকারিতা, টমেটোর পুষ্টিগুণ উপাদান সহ সকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানালাম। যা পড়ে যে কোন মানুষ টমেটোর সকল বিষয় জানতে পারবে এবং টমেটো খাওয়ার বিষয়ে উৎসাহ পাবে।

বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে টমেটো খেতে পছন্দ করে। অনেকে তরকারির সাথে, অনেকে সালাদ হিসেবে বা অনেকে মুখরোচক খাবারের সাথে সস হিসাবে খেয়ে থাকে। টমেটোতে থাকা পুষ্টিগুণ মানুষের শরীরে জন্য খুবই অপরিহার্য। তাই এই পোস্টের মাধ্যমে টমেটো বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করলাম। 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url