নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা-ত্বকের যত্নে তেজপাতার ব্যবহার
নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এমনকি ত্বকের যত্নে তেজপাতার ব্যবহার অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। তেজপাতা সুগন্ধযুক্ত একটি ঔষধি পাতা। যা প্রতিটি রান্নাঘরেরই একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে কাজ করে।
আমরা তেজপাতা কে অতি সাধারণ মসলা বা পাতা হিসেবে মনে করে থাকি। কিন্তু তেজপাতার অনেক গুণাগুণ ও উপকারিতা আছে যা আমাদের দৈনন্দিন অনেক কাজে লাগে । সহজভাবে আমরা হাতের নাগালে পেয়ে থাকি বলে এর গুরুত্বটা উপলব্ধি করতে পারিনা। আজকে আমরা নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা ও ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
তেজপাতার প্রকৃতি ও প্রকারভেদ
তেজপাতা সুগন্ধিযুক্ত একটি ঔষধি পাতা। এটি একটি লরাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। তেজপাতা প্রায় এক হাজার বছরের বেশি সময় ধরে খাবার ও ঔষধি পাতা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
তেজপাতার আড়াইহাজার প্রজাতি আছে। বেশিরভাগ তেজপাতা পাওয়া যায়, পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকায়।
অসাধারণ একটি মসলা ও ঐতিহ্যগতভাবে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তেজপাতা দুটি প্রজাতি বেশি ব্যবহার করা হয়। প্রথমটি হল লরাস আজোরিকা এবং অন্যটি হলো এল. নোবলিস। তেজপাতা শুকিয়ে গুড়ো করে ব্যবহার করা হয়।
তেজপাতার পুষ্টিগুণ ও উপাদান
তেজপাতা পুষ্টিগুনে ভরপুর সমৃদ্ধ একটি ওষুধি পাতা। তেজপাতায় প্রোটিন, ফ্যাট, আয়রন, ভিটামিন সবই আছে । যেমন-
- খাদ্য শক্তি ৩১৩ ক্যালোরি
- জল ৫. ৪৪ গ্রাম
- প্রোটিন ৭. ৬১ গ্রাম
- ফ্যাট ৮.৩৬ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট ৭৪. ৯ ৭ গ্রাম
- ফাইবার ২৬.৩ গ্রাম
- আয়রন ৪৩. ০ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম ৮৩৪ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি ৪৬.৫ মিলিগ্রাম
তেজপাতার উপকারিতা
নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার ফলে শরীরের যেমন উপকার হয় আবার ত্বকের ক্ষেত্রেও তেমনি উপকার করে। অনেক সময় আমরা তেজপাতা নিয়ে নানা রকম কথা বলে থাকি। যেমন, কাজ করতে করতে জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেল। তেজপাতা দিয়ে আমরা বিভিন্ন খাবার রান্না করি যা আমাদের খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।
প্রাচীন কাল থেকেই তেজপাতা মশলা ও ঔষধি পাতা হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। তেজপাতার গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না। নানা রকম গুনে সমৃদ্ধ এই সাধারন পাতা। যা আমাদের প্রতিটি বাড়িকে করেছে সমৃদ্ধ। তেজপাতার আরোও উপকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা দূর করতে তেজপাতার উপকারিতা
শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে তেজপাতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ব্রংকাইটি, এজমা, বহুদিনের পুরনো কাশি ইত্যাদি সারাতে এই তেজপাতা খুবই ভালো কাজ করে। তেজপাতার মধ্যে বিশেষ ধরনের ইথানলিক নির্যাস ও যৌগ উপাদান থাকে যা শরীরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে ও শরীরকে সুস্থ করে।
ব্যবহারবিধিঃ তেজপাতার নির্যাস এর তেল কে ভালো করে আলতো হাতে দিনে ২-৩ বার মালিশ করতে হবে। তাহলে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা অনেক অংশ দূর হবে। এছাড়াও রং চায়ের সাথে তেজপাতা দিয়ে চা খেলে ঠান্ডার সমস্যা কমে।
মানসিক রোগ নিরাময়ে তেজপাতার উপকারিতা
দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত রোগী মানসিকভাবে অশান্তিতে থাকে। মানসিক সমস্যার কারণে আমরা নানা ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা এত বেশি যে, মানসিক রোগী ও সুস্থ হয়ে যায়।
ব্যবহারবিধিঃ তেজপাতা কে তিন চার দিন ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর তেজপাতা গুলোকে ভালো করে গুড়ো করে নিতে হবে। এগুলো করা তেজপাতা তরকারি বা পানিতে ফুটিয়ে খেলে অনেক ভালো কাজ করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে তেজপাত উপকারিতার
ক্যান্সার প্রতিরোধে বিজ্ঞানীরা নানাভাবে নানা রকমের গবেষণা করে চলেছে। কিন্তু এখনো এই রোগে সঠিক কোন সহজ ও সাশ্রয়ী চিকিৎসা খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
তবে, আমরা আমাদের দৈনন্দন খাদ্য তালিকা ও জীবন অভ্যাস পরিবর্তন এর মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধে অনেক ভূমিকা রাখতে পারি। নিয়মিত খাবার তালিকায় প্রয়োজনীয় কিছু খাবারের উপাদান গুলো যুক্ত করলে আমরা বিভিন্ন অসুখ থেকে রক্ষা পেতে পারি। যেমন, তেজপাতার নির্যাসে ক্যান্সার প্রতিষেধক অ্যান্টিকার্সিনোজেনি প্রভাব আছে। যা স্তন ক্যান্সার বৃদ্ধিতে বাধা দিতে সহায়তা করে।
এছাড়াও বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, তেজপাতার মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য আছে তা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
ব্যবহারবিধিঃ বিভিন্ন তরকারিতে যেমন ডাল, বিভিন্ন সবজি ও আরও সব খাবারে তেজপাতা গুলো করে বা গোটা তেজপাতা দিলে তেজপাতার যে উপাদান টা রান্নার সাথে মিশে যায় ফলে তা আমরা খেলে আমাদের শরীরে সে উপাদানগুলো গিয়ে শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে তেজপাতার উপকারিতা
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ডায়াবেটিস রোগী দেখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না থাকলে কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা সহ নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। তেজপাতার ব্যবহারের ফলে রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে ফলে শরীরকে সুস্থ রাখে।
ব্যবহারবিধিঃ চিনি ছাড়া রং চায়ের সাথে এক চামচ গুড়া তেজপাতা মিশিয়ে কিংবা একটা গোটা তেজপাতা দিয়ে রং চায়ের সাথে দুই মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর উষ্ণ গরম গরম চা খেতে হবে। তাহলে অতি সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
তেজপাতা হজমে সাহায্য করে
তেজপাতা স্বাভাবিক হজম শক্তি তৈরি করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে তেজপাতা। এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেয়। অতিরিক্ত প্রসবের সমস্যা দূর করে। হজম রস তৈরিতে এটি উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে। তেজপাতায় থাকা এনজাইম দ্রুত খাবার ভাঙতে পারে ফলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দ্রুত সারাতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধিঃ প্রতিদিন রাত্রেবেলা দুটো তেজপাতা এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকাল বেলা সেই ভিজানো মানে খালি পেটে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত এক সপ্তাহ তেজপাতা ভিজানো পানি খেলে সহজেই গ্যাস্ট্রিক নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
চুলের যত্নের তেজপাতার উপকারিতা
চুলের সব রকম সমস্যা দূর করতে তেজপাতা কার্যকরী ভূমিকা। পালন করে। চুলের গোড়াকে শক্ত ও মজবুত করতে তেজপাতায় থাকা উপাদান যেমন অ্যান্টিব্যাকেরিয়া ও অ্যান্টি ছত্রাক বিশেষ সাহায্য করে। তেজপাতায় থাকা উপাদান চুলের গোড়াকে যেমন শক্ত করে তেমনি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধিঃ মাথায় খুশকি হলে তেজপাতা ভিজানো পানি দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে ।এভাবে নিয়মিত এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে দেখা যাবে চুলের খুশকি কমে যাবে এবং চুলের গোড়া শক্ত হয়ে, চুল মসৃণ ও স্বাস্থ্যে উজ্জল হবে।
ত্বকের যত্নে তেজপাতার উপকারিতা
তেজপাতা ত্বকের যত্নের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। তেজপাতার তেল বিভিন্ন সুগন্ধি যুক্ত প্রসধনী তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। যেমন বিভিন্ন সাবান, তেল, ক্রিম ইত্যাদি সুগন্ধি যুক্ত প্রসাধনী তৈরিতে তেজপাতার বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা হয়।
এটি ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। কারণ এর মধ্যে আছে অ্যাস্টিজেন্ট বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও তেজপাতা ত্বকের ফুসকুড়ি, কালো দাগ, ছোপ দাগ, ত্বকের চুলকানি, ব্রণ ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধিঃ ৭-৮ টি কাঁচা তেজপাতা ভালো করে পানিতে ধুয়ে সেটা পেস্ট করে নিতে হবে। তারপর সেই তেজপাতার পাতা পেস্ট টি ভালোভাবে মুখের কালো দাগ, ছোপ দাগে ভালো করে লাগাতে হবে।১৫-২০ মিনিট পেস্ট টি লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
তারপর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে ৭ থেকে ১০ দিন ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে।
ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে তেজপাতার উপকারিতা
শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে তেজপাতা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তেজপাতা যে সকল উপাদান আছে সেগুলো শরীরের বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দূর করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ঘামের ফলে যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় তা তেজপাতা যুক্ত পানি দিয়ে গোসল করলে তা ঠিক হয়ে যায়।
ব্যবহারবিধিঃ এক বালতি পানিতে কয়েকটি তেজপাতা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেই তেজপাতা ভেজানো পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করতে হবে।
মুখ ও দাঁতের যত্নে তেজপাতার উপকারিতা
তেজপাতা দাঁতের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। তেজপাতা গাছের ডালে ও পাতায় অধ্যায়ী তেল থাকে। যেটি আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহ ও সঞ্চালন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও তেজপাতায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যা মারিকে শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
তেজপাতার ছাই দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁত শক্ত ও ঝকঝকে হয়। মুখের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করে।
ব্যবহারবিধিঃ তেজপাতা পুড়িয়ে ছাই তৈরি করতে হবে। তারপর সেই ছাই দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের ব্যথা দূর হবে।
বাতের ব্যথা উপশমে তেজপাতার উপকারিতা
বাতের ব্যথা উপশমে তেজপাতা খুবই উপকারী উপাদান। তেজপাতার ভেষজ উপাদান ঘাট কিংবা বাতের ব্যথা একেবারে কমিয়ে দেয়।
ব্যবহারবিধিঃ তেজপাতা গাছের ছাল গুড়া করে ব্যথাযুক্ত স্থানে প্রলেপ করে লাগিয়ে দিলে ব্যথা কমে যায়।
অনিদ্রা দূর করতে তেজপাতার উপকারিতা
বর্তমান যুগে ঘুম না হওয়া এত বড় সমস্যা । প্রায় অনেক মানুষই আছে যাদের নিয়মিত ঘুম হয় না। সারাদিন নানা কাজের প্রেসার এবং বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে সময়মতো ঘুম হয় না। আর এ কারণে শরীরের নানা সমস্যা দেখা দেয়। শরীরের বিভিন্ন হরমোনের ক্ষয় হতে থাকে। যা শরীরকে নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তেজপাতা অনিদ্রা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই, নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা ও ব্যবহারের ফল অনস্বীকার্য।
ব্যবহারবিধিঃ প্রতিদিন ঘুমানোর আগে শোবার ঘরে দুই তিনটা তেজপাতা দিয়ে ঘরে ধোঁয়া করে নিতে হবে। তারপর ধোঁয়া চলে গেলে সেই ঘরে ঘুমাতে হবে তাহলে ঘুম ভালো হবে।
তেজপাতা কোলেস্টেরল ও হার্ট অ্যাটাকের উপকারিতা
তেজপাতা আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে শরীরকে সুস্থ ভালো রাখতে সাহায্য করে। তেজপাতায় থাকা ইথানল নির্যাস কোলেস্টেরলের সিরাম স্তর কমিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
তেজপাতার মধ্যে থাকা এই উপাদানটি মানবদেহের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।
তেজপাতার মধ্যে ক্যাফেড অ্যাসিড থাকে যা আমাদের হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ থাকলে হৃদপিণ্ড ঠিকভাবে কাজ করে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে।
ব্যবহারবিধিঃ প্রতিদিন নিয়মিত হালকা গরম পানিতে দুই তিনটা তেজপাতা পাঁচ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে ।তারপর সেই পানি খেতে হবে তাহলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে যাবে।
কিডনি সমস্যায় তেজপাতার উপকারিতা
তেজপাতার নির্যাস কিডনি ও মূত্রনালীর পাথরের চিকিৎসায় প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। তেজপাতার নির্যাস মূত্রনালী পেশি শীথল করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে লরিক ক্যাসিড আছে যা কিডনির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধিঃ প্রতিদিন নিয়মিতভাবে তেজপাতা ভিজানো পানি পান করলে সঠিকভাবে মূত্র ত্যাগ হয় ফলে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করে।
নখের সমস্যা তেজপাতার উপকারিতা
তেজপাতায় থাকা ভেষজ গুণ নখের সমস্যায় অনেক বেশি উপকার করে । নিয়মিতভাবে তেজপাতা ব্যবহার করলে নখ ভালো থাকে।
ব্যবহারবিধিঃ তেজপাতার সাথে দুইটি ই-ক্যাপসুল দিয়ে পেস্ট করে ভালো করে নখের চারপাশে লাগাতে হবে তাহলে নখ পরিষ্কার ও ভালো থাকবে।
ওজন কমাতে তেজপাতার উপকারিতা
নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা ওজন কমাতে সাহায্য করে। তেজপাতা এমন একটি ভেষজ উপাদান যা খিদে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তেজপাতা খাওয়ার পর অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ এড়াতে পারে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
ব্যবহারবিধিঃ প্রতিদিন নিয়মিত তেজপাতা ভেজানো মানে খেতে হবে। দৈনন্দিন খাবারের রান্নার সাথে তেজপাতা ব্যবহার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
নিয়মিত তেজপাতার চা খাওয়ার উপকারিতা
নিয়মিত তেজপাতার চা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। প্রতিদিন তেজপাতা দিয়ে চা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। অতিরিক্ত ঠান্ডা, সর্দি, কাশি কমাতে তেজপাতার রং চা সাহায্য করে। ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা হলে তেজপাতা সহ আরো উপাদান দিয়ে তৈরি কারা গলা ব্যথা কমাতে পারে।
তেজপাতার অপকারিতা
প্রতিটা জিনিসেরই উপকারী ও অপকারী দিক থাকে। যদিও তেজপাতা উপকারিতা অনেক বেশি যা বলে শেষ করা যাবে না। তবে বেশি ব্যবহারের ফলে অনেক সময় কিছু খারাপ লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। তেজপাতা ব্যবহারে কিছু সতর্কতা দেওয়া হলো-
- গর্ভাবস্থায় তেজপাতা ব্যবহারে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- যাদের অতিরিক্ত এলার্জি সমস্যা আছে তারা তেজপাতা ব্যবহারে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- অতিরিক্ত হার্টের সমস্যায় ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে তেজপাতার ব্যবহার করতে হবে।
- চোখে এলার্জি সমস্যা থাকলে তেজপাতা ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।
পরিশেষে
নিয়মিত তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা ও ব্যবহার সম্পর্কে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। যদিও প্রাচীনকাল থেকে তেজপাতা ঔষধি ও ভেষজ উপাদান হিসেবে কাজ করে থাকে। তেজপাতার অনেক গুণাগুণ আছে ও আমাদের দৈনন্দিন প্রতিটি রান্নার কাজে লাগে এই তেজপাতা।
আজকের এই পোস্টে তেজপাতা উপকারিতা অপকারিতা ও গুনাগুন ও বিভিন্ন ভাবে এর ব্যবহার জানালাম। যা সকলের উপকারে আসবে। আশা করি, পোস্টটি পড়ে সকলে উপকৃত হবেন। আপনি যদি নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত আমাদের ওয়েব সাইটটি ফলো করতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url