রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ - রোমানিয়া যেতে কত টাকা লাগে
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ এ অনেক নিয়ম নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছে রোমানিয়া সরকার। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার সকল তথ্য এবং রোমানিয়া যেতে কত টাকা লাগে সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।
বর্তমানে বাংলাদেশীদের কাছে রোমানিয়া একটি স্বপ্নের দেশে পরিণত হয়েছে। রোমানিয়ার উন্নত জীবনযাত্রা মান এবং উচ্চ বেতন ইত্যাদি অনেক বাংলাদেশী মানুষকে আগ্রহী করে তুলেছে।
রোমানিয়া ভিসা আপডেট - ২০২৪
রোমানিয়া ভিসায় এবছর গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। গত বছরে রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন পরিবর্তন করেছিল। কিন্তু এ বছরে মার্চের শেষের দিকে রোমানিয়া। সেনজন ভুক্ত হয়েছে। ফলে এই দেশের নাগরিকরা কোনরকম বিশাল ছাড়াই ইউরোপের সেনজেনভুক্ত ২৭ টি দেশে যাতায়াত করতে পারবে।
এখন থেকে রোমানিয়ার নাগরিকরা সেনজন দেশের সকল সুবিধা ভোগ করতে পারবে। রোমানিয়া আগে আংশিক সেনজন ভুক্ত হয়েছিল। এখন রোমানিয়া সেনজেনভুক্ত দেশে পূর্ণ সদস্য পদ লাভ করেছে। এবং গত বছরের থেকে এ বছরে রোমানিয়ার ভিসা পাওয়ার নিয়ম কানুন কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।
বিদেশ যাওয়ার পূর্বে প্রয়োজনীয় ধাপ সমূহ
বিদেশ যাওয়ার পূর্বে প্রয়োজনীয় অনেক বিষয় আছে যেগুলো ঠিকঠাক করে না করলে পরবর্তীতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কাজগুলোর বিভিন্ন ধাপ দেওয়া হল-
- বৈধভাবে ও নিরাপদে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া।
- প্রথমে লাভ ক্ষতির হিসাব করে বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
- সংশ্লিষ্ট ডিইএমওতে নাম নিবন্ধন করতে হবে।
- যে দেশে যেতে ইচ্ছুক সে দেশের ভাষা জেনে নিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কাজে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
- সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্ট এর মাধ্যমে বিদেশ যেতে হবে।
- পাসপোর্ট নিজের কাছেই রাখতে হবে এবং ভিসা সংগ্রহ করে যাচাই করে নিতে হবে।
- চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করার পূর্বে ভালো করে পড়ে বুঝে নিতে হবে।
- অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টার থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
- সংশ্লিষ্ট ডিইএমও অফিসে ফিঙ্গার প্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ দিতে হবে।
- বিদেশ যাওয়ার পূর্বে তিনদিনের প্রাক বহির্গমন প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে।
- বিদেশ যাওয়ার পূর্বে দুইটি ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে।
- বিএমইটির স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে হবে।
- বিদেশ যাওয়ার পূর্বে সমস্ত কাগজপত্রের ৩ সেট ফটোকপি করে সংরক্ষণ করতে হবে।
রোমানিয়া ভিসার আপডেট নিয়ম
রোমানিয়ার ভিসায় এখন অনেক আপডেট হয়েছে। রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আগের চেয়ে এখন অনেক জটিল হয়ে গেছে। এখন খুব সহজে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম কানুনের অনেক পরিবর্তন এনেছে।
তবে রোমানিয়ার অন্যান্য ভিসার ক্ষেত্রে তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। সেনজন ভুক্ত হওয়ার আগে যে নিয়ম ছিল সেগুলোই এখনো আছে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এনেছে। যেমন-
- ভিসা আবেদনের জন্য রোমানিয়া কোম্পানির কাছ থেকে কাজের একটি অফার লেটার পেতে হবে।
- মাসিক বেতন কমপক্ষে ২৫০০ ইউরো হতে হবে।
- রোমানিয়ার ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
রোমানিয়ার দূতাবাস কি বাংলাদেশে
রোমানিয়ার কোন দূতাবাস বাংলাদেশে নেই। রোমানিয়ার দূতাবাস ভারতে আছে। ফলে ভারতে গিয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। রোমানিয়ায় কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে রোমানিয়া য় কাজের বেতন কত।
কম খরচে এবং নিরাপদে যেতে চাইলে অবশ্যই সরকারি ভাবে রোমানিয়ায় যেতে হবে। এজন্য সরকারই ভাবে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য যে সকল নিয়ম কানুন আছে সেগুলো অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। সরকারি ভাবে গেলে কাজের নিশ্চয়তা থাকে এবং যাওয়ার পরে দালালের ভয় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সরকারি ভাবে রোমানিয়া যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বহু লোক রোমানেয়ে যায়। সরকারিভাবে প্রমাণিয়াই যেতে পারলে খরচ অনেকটা কমে যাবে। কারণ সরকারিভাবে গেলে বেশিরভাগ খরচ কোম্পানি বহন করে থাকে। প্রতিবছর চুক্তির মাধ্যমে রোমানেয়া সরকারের মাধ্যমে ওই দেশের কোম্পানি গুলো বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে।
সরকারিভাবে রোমানিয়া যাওয়ার জন্য সরকারিভাবে সার্কুলার দেওয়া হয়। সরকারি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বোয়েসেলে সার্কুলার প্রকাশ করা হয়। আর এই ওয়েবসাইটে সব সময় খেয়াল করে রাখতে হবে। যখন রোমানিয়ায় নিয়োগের সার্কুলার প্রকাশ করা হবে তখন আবেদন করতে হবে।
আবেদন জমার শেষ হলে আবেদনকারীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। রোমানিয়ার কোম্পানি থেকে লোক এসে আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবে। সাক্ষাৎকার অবশ্যই ভালো করতে হবে। এবং ওয়ার্ক পারমিটে যাওয়ার জন্য কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
তারপরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে রোমানিয়ার দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আবেদন পত্রটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিতে পারে বা রিজেক্ট করে দিতে পারে। এবং রোমানিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার অনুমোদন পেলেই রোমানিয়া যাওয়া যাবে।
রোমানিয়ার ভিসা আবেদনের জন্য যা যা লাগবে
রোমানিয়ায় একেক জন একেক ভিসায় গিয়ে থাকে। ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একটু আলাদা হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একই কাগজপত্র লাগে। রোমানিয়া যেতে কিছু আবশ্যিক কাগজপত্র লাগবে যেগুলো ছাড়া আবেদনই করা যাবে না। রোমানিয়ার ভিসা আবেদনের জন্য যা যা লাগবে দেওয়া হল-
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র
- ইংরেজি ভাষার দক্ষতা সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট কপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট কপি
- রোমানিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফার লেটার (স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে)
- ভ্রমণ বীমা (টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে)
- টুরিস্ট ভিসার জন্য ভ্রমণের প্রমাণপত্র
রোমানিয়া যেতে কেমন বয়স লাগে
রোমানিয়া িয়া যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন বয়সসীমা নেই। তবে যারা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যাবে তাদের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২১ বছর হলে ভালো হয়। এছাড়া যারা চিকিৎসা, ভিজিট এবং অন্যান্য ভিসায় যায় তাদের ক্ষেত্রে বয়সের কোন রিকোয়ারমেন্ট নাই।
যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই অভিভাবকের অনুমতি লাগবে। আর অভিভাবকের সঙ্গে ভ্রমণ করলে জন্ম সনদের অনুবাদ কপি লাগবে। এবং বাবা মা ছাড়া অন্য কারো সাথে ভ্রমন করলে জন্ম সনদের নোটারাইজড কপি লাগবে এবং অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য প্রদান কপি।
রোমানিয়া যেতে কত দিন সময় লাগে
রোমানিয়া যেতে কতদিন সময় লাগবে সেটা নির্ভর করে পরিবহন মাধ্যমে উপর। সরকারিভাবে বা বেসরকারি হবে যাওয়ার ক্ষেত্রে এবং দালালের মাধ্যমে যাওয়ার ওপরও নির্ভর করে কতটা সময় লাগতে পারে। বৈধভাবে সরকারি বা বেসরকারি ভাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে রোমানের রাজধানী বুখারি যেতে সময় লাগে-
- বিমানে গেলে সময় লাগবে দশ ঘন্টা।
- জাহাজের মাধ্যমে গেলে সময় লাগবে ১০ দিন।
- স্থলযান পরিবহনের মাধ্যমে গেলে সময় লাগবে ৭ দিন।
অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে রোমানিয়া যেতে কতটা সময় লাগবে সেটা নির্ভর করে দালাল কিভাবে বা কোন পথ দিয়ে নিয়ে যাবে। আর দালালরা সাধারণত বিভিন্ন ভাবে নিয়ে যায়। এর জন্য কতটা সময় লাগবে সেটা বলা সম্ভব নয় কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে আবার এক মাসও লাগতে পারে। তবে পরামর্শ থাকবে অবশ্যই দালালের মাধ্যমে যাওয়া যাবেনা।
রোমানিয়া ভিসা প্রসেসিং এ রিকুয়েটিং এজেন্সি চেনার উপায়
বাংলাদেশীদের কাজের জন্য রোমানিয়া একটি আকর্ষণীয় জায়গা। রোমানিয়ার উন্নত জীবনযাত্রার মান, উচ্চ বেতন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ মানুষকে বেশি আকর্ষণ করছে। রোমাণীয়ায় কাজ করার উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে বিশ্বাস তো রিক্রেটিং এজেন্সি মাধ্যমে যেতে হবে। তবে আগে থেকে জেনে রাখা ভালো যে রোমানিয়া যেতে কত টাকা লাগে। রিকুরেটিং এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রে চেনার কিছু বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো-
- এজেন্সি লাইসেন্স আছে কিনা তা দেখতে হবে।
- এজেন্সির অভিজ্ঞতা ও সুনাম সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে।
- এজেন্সির ফ্রি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
- এজেন্সির সাথে চুক্তি করার আগে সব শর্তাবলী ভালো হবে বুঝে নিতে হবে।
- প্রতারক এজেন্সিদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
- টাকা দেওয়ার আগে ভালো হবে খোঁজ নিতে হবে।
- ব্যক্তিগত তথ্য সাবধানে শেয়ার করতে হবে।
ভালো রিগাইটিং এজেন্সির সাহায্যে রোমানিয়া যাওয়া যাবে। এজেন্সি গুলো রোমানিয়ার বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে থাকে এবং তারা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সাথে মানানসই চাকরি খুঁজে দিতে পারে।
পরিশেষে
আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে রোমানিয়ার ভিসার আপডেট সব নিয়মনীতি, রোমানিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং কত সময় লাগে, কোন ধরনের এজেন্সি মাধ্যমে গেলে ভালো হয় সকল বিষয় জানানোর চেষ্টা করলাম। আশা করি পোস্টটির মাধ্যমে সঠিকভাবে জেনে ও বুঝে বিদেশ গমনে সিদ্ধান্ত নিবেন।
অবৈধভাবে রোমানিয়া যাওয়া অত্যন্ত বিপদজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ। অবশ্যই অবৈধভাবে বিদেশ ভ্রমণ করবেন না। কারণ যাত্রাপথে বিভিন্ন সমস্যা সম্মুখে হতে পারে। এমনকি পথ্যিমধ্যে মৃত্যুও হতে পারে। তাই অবশ্যই সরকারি ভাবে যাওয়ার উপায় জেনে বৈধভাবে যাওয়া নিরাপদ।
সরকারিভাবে বৈধ উপায় বিদেশে গেলে নিরাপদে বিদেশে গিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে যাই। ফলে পরিবারসহ সকলে নিরাপদে ভালো থাকে। নিয়মিত বিভিন্ন আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে www.jarinonline.com ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url