শিশুর ওপর প্রযুক্তির প্রভাব - শিশুর মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
শিশুর ওপর প্রযুক্তির প্রভাব - শিশুর মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব শিশু বিকাশে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু শিশুর মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকায় সবচেয়ে বেশি। পরিবারই শিশুর মানসিক বিকাশের প্রথম পাঠশালা। আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশ ও প্রযুক্তির প্রভাবসহ সকল বিষয় বিস্তারিত জানবো।
বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে শিশুরা আসক্ত হয়ে পড়েছে। বড়দের পাশাপাশি ছোটরা ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাচ্চারা বাইরের খেলাধুলা ছেড়ে এখন ঘরে বসে কম্পিউটার মোবাইল বা ল্যাপটপে দীর্ঘ সময় ধরে গেম খেলছে। যা বাচ্চা বাইরের জগতকে ভুলে যাচ্ছে। পরিবারকে ভুলে যাচ্ছে।
শিশুর ওপর প্রযুক্তির প্রভাব
বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ছাড়া আমরা কোন কাজ করতে পারি না। বিভিন্ন কাজের জন্য প্রতিদিন আমরা একটি দীর্ঘ সময় ইন্টারনেটে সময় পার করি। বিজ্ঞানের এই আশীর্বাদ আমাদের প্রযুক্তির নেতিবাচক ফল নিয়ে আসতে পারে সামান্য অসচেতনতার কারণে।
বড়দের পাশাপাশি ছোটরা এখন ইন্টারনেট বলতে অজ্ঞান। ঘন্টার পর ঘন্টা তারা ব্যয় করছে ল্যাপটপ কম্পিউটার বা স্মার্টফোন নিয়ে। যা তাদের জন্য ক্ষতির পরিমাণটাই বেশি করছে। ইন্টারনেট আমাদের জন্য কল্যাণ হলেও ছোটরা নানা হবে এটাতে আসক্ত হচ্ছে।
তবে প্রযুক্তি ভালো ব্যবহারের ফলে শিশুদের অনেক উপকার ও হতে পারে। যেমন ক্লাসের পড়া থেকে শুরু করে নানা ধরনের প্রজেক্টে কাজের জন্য তাদের নানা তথ্য প্রয়োজন পড়ে। আর প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই তারা এই কাজগুলো ঘরে বসে করতে পারে।
তাছাড়া বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করছে বাচ্চারা। বাইরে খেলাধুলা ব্যবস্থা না থাকার ফলে তারা ঘরে বসেই কম্পিউটার ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলছে। এতে করে তাদের বুদ্ধিরও বিকাশ হচ্ছে।
বাইরে দেশগুলোতে কি হচ্ছে খুব সহজে তারা ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে জানতে পারে। যা শিশুকে সামাজিক বা বিশ্বায়নে সকল বিষয় সহজেই বুঝতে চেষ্টা করছে। এছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে একটি শিশু সাধারণ জ্ঞান সহ সকল বিষয় জানতে পারে।
শিশুর বিকাশে প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব
বিশ্বের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শীর্ষ অবস্থা এবং উন্নয়নের পরশে মানুষের জীবনযাত্রা অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। প্রযুক্তির ইন্টারনেট ব্যবহার মানুষের যেমন উপকার করেছে কিছু ক্ষেত্রে অপব্যবহার হয়েছে। উন্নত বিশ্বের শিশুদের মতো বাংলাদেশে কিছু কৃষকদের মধ্যে প্রযুক্তি ব্যবহার অনেক বেশি আসক্ত হয়েছে। প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব শিশুর শারীরিক ও ও মানসিক প্রভাব পড়ছে
পরিবারে মা ও শিশুর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পারিবারিক কথাবার্তা শিক্ষা শিষ্টাচার মূল্যবোধ ধর্মীয় সামাজিক আচরণ থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিতে নিয়মিত অনুপস্থিতি থাকার কারণে বিভিন্ন কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছে।
দিন দিন শিশুও কিশোররা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। অপরিণত বয়সেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। বাবা মার অজান্তে ই সন্তান কাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখছে তাও জানা সুযোগ থাকছে না। তারা বিভিন্ন ভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
শিশু কিশোরদের মধ্যে অধিক মাত্রায় ভিডিও গান বা ফেসবুকের মত ভার্চুয়াল লাইফে সংশ্লিষ্টতা ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে। রাত জেগে জেগে তারা এসব কাজে মগ্ন থাকছে। সকালে ক্লাসে বিশাল অমনোযোগী থাকার ফলে মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
বিরতিহীনভাবে এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে শিশুদের চোখ ও মস্তিষ্কে সমস্যা হচ্ছে। রেডিয়েশনের প্রভাবে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমে যাচ্ছে। মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। কোন কিছুতে আগ্রহ থাকে না। কোন কিংবা খেলাধুলা করতে চায় না। সারাক্ষণ আঙ্গুল, চোখ ও মস্তিষ্ক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তাদের মনের চাহিদা পূরণ করছে।
ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহারের ফলে শিশুর যেসব সমস্যা দেখা দেয়
ঘুমের সমস্যাঃ একটি শিশু দৈনিক অন্তত দশ থেকে ১২ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু বাচ্চারা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্যবহারের ফলে ঘুমায় না। ঘুমিয়ে তারা ল্যাপটপ বা মোবাইল নিয়ে গেম খেলে বা বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ফলে তাদের এ বয়সে যতটুকু ঘুমের প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত পরিমাণে হয় না। ফলে পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে।
শিশুর মানসিক সমস্যাঃ মোবাইল বা ল্যাপটপ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস শিশুদের তাড়াতাড়ি আসক্ত করে ফেলে। প্রত্যেক ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস দ্রুত বাচ্চাদের আসক্ত করতে পারে। যার ফলে বাচ্চারা এগুলো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এমনকি খাওয়া দাওয়া ঘুম সবকিছু বাদ দিয়ে দেয়।
মিজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং সহজে রাগ হওয়া বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া এরকম সমস্যা এখন প্রায় প্রত্যেক পরিবারে বাচ্চাদেরকে নিয়ে বাবা মা সমস্যায় পড়ছে। এভাবে শিশুদের মানসিক পরিবর্তনে অনেক বেশি প্রভাব ফেলছে। তাৎক্ষণিক মানসিক পরিবর্তনের ফলে শিশুরা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে।
যা পরবর্তী সময়ে শিশুর মধ্যে হতাশা, বিষন্নতা মতো বিভিন্ন ধরনের জটিল সমস্যার সৃষ্টি করে। এবং তারা পড়াশোনা সহ সকল কাজে মনোযোগ দিতে পারে না। মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা লোপ পাই।
২ ঘণ্টার বেশি মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহার করলে শিশুদের মধ্যে এরকম সমস্যা অধিক হয়ে থাকবে। পরবর্তী সময়ে আরো বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হবে।
শারীরিক সমস্যাঃ অতিরিক্ত মোবাইল বা ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে শিশুদের মধ্যে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন, অলসতা, স্থূলতা, মেঘ বৃদ্ধি পাওয়া এবং ডায়াবেটিসহ বিভিন্ন জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়।
চোখের সমস্যাঃ ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে যে ধরনের ইউভি রশ্মি বের হয় তা চোখের জন্য মারাত্মক এবং ক্ষতিকর। শিশুদের চোখের জন্য আরো অনেক বেশি ক্ষতিকর। কারণ শিশুদের শরীরের প্রতিটি মাননীয় পতঙ্গ থেকে শুরু করে সবকিছুই অনেক বেশি দুর্বল হয়ে থাকে।
এমন সময় ইলেকট্রনিক্স থেকে নির্গত রশ্মি চোখের প্রয়োজনীয় পানি সেকেন্ডে চোখে পলক ফেলার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এবং নানা রকম জটিল সমস্যা সৃষ্টি হয়। সবথেকে যদি সমস্যা যে শিশুটি আসক্তিতে চলে যায়। যা কোন ভাবে একটি শিশুর জন্য কাম্য নয়।
শিশুরা প্রতিনিয়ত শিখবে। একটি শিশুর মধ্যে ভালো মন্দ ইতিবাচক নেতিবাচক ইত্যাদি বোঝার মত ক্ষমতা হয় না। তারা বুঝতে পারে না যে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ। ফলে তারা সহজে কোন জিনিসে আসক্ত হয়ে পড়ে। এতে তাদের সঠিক বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই শিশুদের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস থেকে দূরে রাখা উত্তম।
ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের আসক্তি কমাতে করনীয়
বাচ্চাদের খাবার খাওনোর জন্য মায়েরা অনেক সময় মোবাইল হাতে দিয়ে খাওয়ায়। এতে করে বাচ্চা মোবাইল ছাড়া খাবার খাই না । হলে সে ওটাতেই অভ্যস্ত হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে শিশুরা মোবাইল ছাড়া আর খাবার খায় না। ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে আসক্তি কমাতে যা যা করনীয়-
- দুই বছরের কম বয়সে শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন না দেওয়া।
- বাচ্চাদের ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন না দেওয়া।
- বাচ্চাদের বিনোদনে মাধ্যম হিসেবে মোবাইল, টেলিভিশন, টেলিফোন, ভিডিও গেম, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহার না করা।
- শিশুদের মাঠে খেলাধুলা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা।
- অন্যান্য শিশুদের সাথে খেলতে দেওয়া।
- নতুন নতুন উদ্ভাবনী বিষয়ের সাথে বাচ্চাকে সম্পৃক্ত করা।
শিশুর মানসিক বিকাশে সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ রূপকার। আজ তারা জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠছে তারাই আগামীর নেতৃত্ব দানকারী। সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি দেশে সকল গণ্ডি পেরিয়ে তারা বিশ্বকে শাসন করছে। আজকের আগামী বিশ্বের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সঠিক জ্ঞান।
যে সমাজে নিজেদের বিকশিত করার সুযোগ পাবে। একদিন সে সমাজের নাগরিক হিসেবে তারাই সৃষ্ট সমান গঠনে সাহায্য করবে। শারীরিকভাবে একটি শিশু বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন খাদ্য প্রয়োজনীয় সঠিক শরীরচর্চা। শিশুদের শরীরচর্চা ও বিনোদনের প্রধান মাধ্যম খেলাধুলা করা।
এবং মানসিকভাবে দেশের জন্য প্রয়োজন শিক্ষা, সংস্কৃতি চর্চা এবং খেলাধুলার বিনোদন। কিন্তু বর্তমানে বাচ্চারা খেলাধুলা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা পাইনা। ফলে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে বেছে নিচ্ছে বাচ্চারা। ডিজিটাল খেলাধুলা বাচ্চাদের জন্য কখনোই শারীরিক সুস্থতা দিতে পারে না।
বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য পর্যাপ্ত খেলাধুলা ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে মিশতে দিতে হবে এবং খেলতে দিতে হবে। যার ফলে বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অপরিহার্য। বাচ্চাদের সাথে পরিবারের সকলের মিশতে হবে এবং প্রয়োজনে বাইরে পার্কে বা বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে নিয়ে তাদের খেলাধুলার বা শরীর চর্চা ব্যবস্থা করতে হবে।
শিশুর মানসিক বিকাশে পরিবারে ভূমিকা
পরিবারই শিশুর প্রথম পাঠশালা। পরিবার থেকে একটি শিশু বেড়ে ওঠার সকল শারীরিক, পারিবারিক, সামাজিক সকল শিক্ষা পেয়ে থাকে। শিশুকে ছোটবেলা থেকে পুণ্য মানসিকতার সূচনা বিকাশ ঘটানো গেলে ভবিষ্যৎ জীবনের শিশু নান রকম মানসিক সমস্যার মোকাবেলা করতে পারে।
একজন সুস্থ সবল মানুষ হিসেবে সমাজের প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। একটি শিশু মানসিকভাবে বেড়ে ওঠা পরিবারের সকল মানুষের কাছ থেকেই পেয়ে থাকে। একটি পরিবারে বাবা মা দাদা দাদি বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কিভাবে চলাফেরা করে কিভাবে কথা বলে সেগুলো দেখে বাচ্চা সেটাই শিখে। আর শিশুরা অনুকরণ প্রিয় তারা যা দেখে সেটাই শিখে।
বর্তমানে বড়রা যেমন সোশ্যাল মিডিয়া নিজেকে সম্পূর্ণ ব্যস্ত রাখে। ফলে শিশুরা সেটা দেখে তারাও সেভাবেই নিজেকে তৈরি করে নেয়। বাবা মা বাচ্চাকে সময় দেয় না ফলে তারাও মোবাইল বা টেলিভিশন ইত্যাদির মাধ্যমে নিজের সময় ব্যয় করে। আর সেভাবেই তারা একসময় আসক্ত হয়ে যায়।
তাই পরিবারের উচিত বাচ্চাকে যথেষ্ট সময় দেওয়া। তাদেরকে বিভিন্ন বিনোদনের মাধ্যমে আনন্দ দেওয়া। বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া। পরিবারের সকলের সাথে গল্প গুজব করা। অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে খেলতে দেওয়া। তাহলে একটা বাচ্চা শারীরিক ও মানসিক ভাবে বেড়ে উঠবে।
শিশুর মানসিক বিকাশে পারিবারিক অশান্তি
পারিবারিক অশান্তি শিশু মানসিক বিকাশে বড় বাঁধা সৃষ্টি হয়ে দাঁড়ায়। কারণ শিশুরা পরিবার থেকে সবকিছু শিখে থাকে। আর যখন একটি শিশু দেখে তার বাবা মা সর্বদা ঝগড়া মারামারি বিভিন্ন ঝামেলায় থাকে তাদের মনে খারাপ মনোভাব তৈরি হয়। এবং মানসিকভাবে তারা ভেঙে পড়ে।
পারিবারিক সংস্কৃতি একটি শিশুকে সবথেকে বেশি প্রভাবিত করে থাকে। শিশু লালন পালনে বাবা মাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহারে বাবা মাকে সংযত থাকতে হবে। পরিবারে ইতিবাচক সাংস্কৃতিক চর্চা করতে হবে।
পরিবারের শিশু এবং বয়স্ক সবারই পরিবারে ঘুম থেকে ওঠা একটি নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে। শিশুদের সময় মতো খাবার দিতে হবে। মানুষের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দিতে হবে। অতিথি আপ্যায়নের যে সাংস্কৃতি সেটি শিশুরা পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে।
কিন্তু বর্তমানে পারিবারিক ভাবে মাদকের প্রভাবের কারণে পরিবারে প্রায় ই অশান্তি লেগে থাকে। যা একটি শিশুকে মানসিকভাবে ভেঙে ফেলে।ফলে তারা ছোট থেকে পরিবারের এরকম অশান্তি দেখে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। একসময় তারাও সমাজ থেকে ঝরে পড়ে এবং পারিবারিক কারণে তারাও সেভাবে কোন না কোন ভাবে আসক্ত হয়ে পড়ে।
শিশুর মানসিক বিকাশে খেলাধুলা
শিশুর মানসিক বিকাশে খেলাধুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাচ্চাকে লেখাপড়ার পাশাপাশি যথেষ্ট পরিমাণ খেলাধুলা করার সুযোগ দিতে হবে। তাদেরকে খোলামেলা খেলাধুলা করার জন্য পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। বাচ্চারা নির্দিষ্ট সময় খেলাধুলা পেছনে ব্যয় করলে তাদের যেমন সঠিক শরীর চর্চা হবে। এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে।
আগে বাচ্চা লালন পালনে বাবা মাকে এতটা চিন্তা করতে হয়নি। কারণ অধিকাংশ পরিবারে ছিল যৌথ পরিবার ফলে পরিবারের মধ্যেই বাচ্চারা নিজেরাই খেলাধুলা করতে পারতো আবার আগে খেলাধুলা করার জন্য পর্যাপ্ত মাঠ ছিল পুকুর ছিল যেখানে বাচ্চার মনের খুশিতে গোসল করতে পারত। নিজেকে প্রকৃতি মাঝেই সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখতো।
তাই আগে বাচ্চারা প্রকৃতির মাঝে বেড়ে উঠতো বলে। তারাও প্রকৃতির মতো স্বচ্ছ এবং মানসিকভাবে ভালো মনের হয়ে উঠতো। প্রকৃতির মতই সরল মানুষ হয়ে বেড়ে উঠত। এজন্য প্রযুক্তি নয় শিশু মানসিক বিকাশ লাভের জন্য খেলাধুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
আধুনিক সমাজ নির্মাণে শিশুর মানসিক বিকাশের প্রয়োজনীয়তা
বর্তমান সময়ে ডিজিটাল ডিভাইস এবং অনলাইনে প্রতি শিশুর আসক্তি খুবই দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নানা হবে শিশুরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। তারা পড়াশোনা বাদ দিয়ে প্রযুক্তির উপর নির্ভর হয়ে পড়ছে। এবং প্রযুক্তিকে তারা সুপথে ব্যবহার করছে না। নানাভাবে প্রযুক্তি অপব্যবহার ফলে নিজের যেমন ক্ষতি করছে তেমনি সুন্দর সময় নির্মাণে পিছিয়ে যাচ্ছে।
অপ্রয়োজনে বিভিন্নভাবে তারা মোবাইল বা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করছে। যার দ্বারা সমাজের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এবং অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মা এটা বুঝতেই পারেনা যে তার সন্তান কি ধরনের কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে গেছে।
কম্পিউটার বা মোবাইলের মাঝে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে একটি প্রজন্ম। বরং সমাজের স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনায় এমন কঠিন ছবি শুভ লক্ষণ প্রকাশ। ডিজিটাল ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীলতা শিশুর সুরক্ষিত পৃথিবীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কিভাবে শিশুর পৃথিবীকে সুরক্ষিত করা যায় আধুনিক জীবন যাপনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে আল মিলিয়ে চলার জন্য জীবনের একটি অংশ কি ভাবে কাজে লাগানো যায় সেদিকে সচেষ্ট হতে হবে। প্রযুক্তি পৃথিবীর আশীর্বাদ তাই প্রযুক্তিকে সময়মতো কাজে লাগাতে হবে। অসময়ে নয়। যখন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সঠিক পথে চলা যাবে তখনই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
পরিশেষে
শিশুর ওপর প্রযুক্তির প্রভাব বর্তমান সময়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এবং শিশু মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকা অনেক বেশি। কারণ একটি শিশু পরিবার থেকেই সকল বিষয় শিখে থাকে। তাই বাবা মাকে বেশি সময় দিতে হবে। শিশুরা যাতে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের প্রতি আসক্ত না হয় সেদিকে বাবা মাকে খেয়াল রাখতে হবে।
শিশুদের যথেষ্ট সময় দিতে হবে পরিবারে বিনোদনের ব্যবস্থা করলে বাচ্চারা পরিবারের মধ্যে বিভিন্নভাবে সময় কাটাবে। আজকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে শিশুর ওপর প্রযুক্তির প্রভাব ও পরিবারের ভূমিকা সহ সকল বিষয় বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করলাম। নিয়মিত বিভিন্ন তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে www.jarinonline.com এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url