টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার ১১ টি সহজ উপায়
টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার ১১ টি সহজ উপায়
টিকটক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় অনেকেই জানে না। আবার অনেকে বুঝতে পারে না যে কিভাবে টিকটক থেকে ইনকাম করা যায়। তাই আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে টিকটক থেকে ইনকাম করার সহজ উপায় গুলো বিস্তারিত আলোচনা করব।
টিকটক থেকে সত্যিই টাকা ইনকাম করা যায়। কিন্তু টিকটকে ফেসবুক বা ইউটিউব এর মত করে মনিটাইজেশন অন করে ইনকাম করা যায় না। টিকটক থেকে আয় করা জন্য অনেক অভিনব কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এবং টিকটক থেকে অনেক উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়।
টিকটক কি
টিকটক অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মতই বিনোদন মূলক ভিডিও পাবলিসিং প্ল্যাটফরম। টিকটকে শর্ট ভিডিও পাবলিস করা হয়। দুই এক বছর আগেও মানুষ টিকটক সম্পর্কে বুঝতো না। বর্তমানে টিকটক সবার কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি সোশ্যাল মিডিয়া।
টিকটক বাংলাদেশে তেমন ভালোভাবে শুরু হয়নি। অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা কারণে tiktok বাংলাদেশের মানুষের কাছে তেমন ইতিবাচক প্রভাব তৈরি তে পারছিল না। তবে বর্তমান সময়ে টিকটক থেকে মানুষ অনেক টাকা ইনকাম করছে।
বর্তমানে টিকটক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও টিকটক মার্কেটারদের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম। টিকটকের কোন ভিডিও খুবই তাড়াতাড়ি রিচ হয়। আর শর্ট ভিডিও হওয়ায় ভিডিও বানাতে তেমন কষ্ট হয় না। তাই এখন টিকটকই সোশ্যাল মিডিয়া খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম।
টিকটকে অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম
টিকটক থেকে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় গুলোর প্রথম ধাপ হল টিকটক একাউন্ট খোলা। টিকটক একাউন্ট খোলা খুবই সহজ একটি কাজ। কয়েকটি ধাপে টিকটকের একাউন্ট খুলতে হয়। টিকটক খোলা নিয়ম নিচে দেওয়া হল-
- প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে tiktok লিখে সার্চ দিতে হবে। এবং প্রথমে যে অ্যাপটি আসবে সেটি ইন্সটল করতে হবে।
- তারপর অ্যাপটিতে ঢুকে সাইন আপ অপশনে ক্লিক করে ইমেইল দিয়ে চায়না করতে হবে। অথবা সরাসরি জিমেইল দিয়ে সাইন আপ করা যাবে।
- যদি ইমেইল দিয়ে একাউন্ট খোলা হয় তাহলে ফোন নাম্বার অথবা ইমেইল এড্রেস ভেরিফাই করে নিতে হবে।
টিকটক করে ইনকাম করার সহজ উপায়
মনিটাইজেশন অন করার প্রথম শর্ত হলো টিকটকে প্রোফাইলে দেয়া জন্ম সাল অনুযায়ী বয়স ১৮ বছর হতে হবে। এবং কমপক্ষে ১০ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে। এবং সব থেকে কঠিন শর্ত হলো মনিটাইজেশন আবেদন করার আগে ৩০ দিনের 100K Views থাকতে হবে। এসব শর্ত পূরণ হলে টিকটক থেকে মনিটাইজেশন দেওয়া হবে।
তবে ইউটিউব বা ফেসবুক মনিটাইজেশন অন করার পর যেমন ইনকাম হয়। টিকটক থেকে তাকে তার চেয়ে ইনকাম কম হয়। তাই অনেকে মনিটাইজেশন অন করে ইনকাম করার বিষয়ে কম গুরুত্ব দেয়। তবে মনিটাইজেশন ছাড়াও টিকটক থেকে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করা যায়।
অনলাইন বিজনেসের মাধ্যমে
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর শক্তিশালী একটি মাধ্যম হলো টিকটক। টিকটকের মাধ্যমে অনলাইনে সহজেই বিজনেস করা যায়। বিজনেস এর ক্ষেত্রে টিকটক একটি শক্তিশালী প্রচার মাধ্যম। কারণ টিকটকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আকর্ষণীয় ভিডিও আপলোড করা যায় এবং এর মাধ্যমে সহজেই অনেক দর্শক এনগেজ হয়। ফলে অল্প সময় অনেক দর্শকের কাছে সহজেই ব্যবসায়ীক পণ্য তুলে ধরা যায়।
তবে এজন্য প্রথমে টিকটকের একাউন্ট তৈরি করে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করতে হবে। আস্তে আস্তে যখন ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়বে তখন ব্যবসায় ভিডিও তৈরি করে ভিডিও আপলোড করতে হবে। এভাবে খুব সহজেই টিকটকের মাধ্যমে ব্যবসা করা যায় এবং ভালো ডিজিটাল মার্কেটিং করে টিকটক থেকে ইনকাম করা যায়।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে
টিকটকে যখন মোটামুটি অনেক দর্শক হয়ে যায় তখন চাইলে কোন প্রোডাক্টের ভিডিও তৈরি করে দর্শকদের সহজে আকৃষ্ট করা যায়। কিন্তু নিজের কোন বিজনেস বা প্রোডাক্ট না থাকলে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমিক ভালো একটি ইনকাম করা যায়।
এফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে অন্য কোন কোম্পানির প্রোডাক্টের প্রমোশন করে বিক্রয় বৃদ্ধি করা এবং বিক্রয়ের ওপর একটি কমিশন আদায় করে। তাই বিভিন্ন মার্কেটিং করে প্রোডাক্ট বিক্রয় করার মাধ্যমে ইনকাম করা যাবে। কোন ওয়েবসাইট বা শপের লিংক দিয়ে টিকটকে ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করা যায়
এছাড়াও সরাসরি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে বিক্রির উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন ওই কোম্পানির দিয়ে থাকে। বর্তমানে অনলাইনে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করছে। বিভিন্ন ব্রান্ড প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে প্রোডাক্ট এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনেক টাকা ইনকাম করা যায়।
প্রোডাক্ট রিভিউ করে
টিকটকে প্রোডাক্ট রিভিউ করে ইনকাম করা যায়। একটি পণ্য ক্রেতা কেনার জন্য সেই পণ্যের উপযোগিতা পণ্যের দাম, পণ্যের উপকারিতা, সমস্যা ইত্যাদি তথ্য নিয়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে। তারপর ভিডিওটি তৈরি করে দর্শকদের জন্য প্রি রিভিউ ভিডিও তৈরি করতে হবে।
প্রথমদিকে ভিউজ কম থাকলে পণ্যের প্রমোশন খুব বেশি হবে না। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকবে তারপর পেইড রিভিউ এর দিকে অগ্রসর হতে হবে। বিভিন্ন কোম্পানি যখন রিভিউ থেকে সম্ভাব্য কে তার রেসপন্স আসবে তখন তারা পেট রিভিউ করতে আসবে।
আর প্রথম থেকে রিভিউ ভিডিও তৈরি করে মানুষের মনে আস্থা তৈরি করতে পারলে। পরে পেইড রিভিউয়ের অনেক বেশি সারা হওয়া যাবে। এতে করে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা দুজনে অনেক খুশি হয়ে থাকে। কিন্তু পেইড রিভিউ এর মাধ্যমে ওই কোম্পানির কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়। এভাবে টিকটক থেকে সহজে ইনকাম করা যায়।
ডোনেশনের মাধ্যমে ইনকাম
টিকটক কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিডিও ভালো লাগবে অনেকেই টিকটকারদের ডোনেশন দিয়ে থাকে।কিছু লোকজন স্বেচ্ছায় ডোনেট করে। তবে বাংলাদেশ এমন সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু বহিরবিশ্বে এমন ডোনারের সংখ্যা অনেক বেশি।
তাই টিকটকের কনটেন্ট গুলো শুধুমাত্র বাংলাদেশ কেন্দ্রিক না হয়ে আন্তর্জাতিক মানের হয় তাহলে ডোনেশন এর মাধ্যমে আয় করার একটি ভালো সুযোগ থাকে। তাই টিকটক ভিডিও বানানোর সময় আন্তর্জাতিক মানের ভিডিও বানাতে হবে। এবং কনটেন্টটি অবশ্যই রুচিসম্মত ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। তাই ভিডিওটি যদি উল্লেখযোগ্য গ্রহণযোগ্যতা পাই তাহলে ভালো এমাউন্ট ডোনেশন পাওয়া যায়।
লাইভ এবং ভার্চুয়াল গিফটের মাধ্যমে ইনকাম
একাউন্ট বিক্রি করে ইনকাম
এক্ষেত্রে অনেকে একাউন্ট তৈরি করে বিক্রি করার জন্য যা থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়। আবার অনেকে নিজস্ব ব্যবহারিত একাউন্ট ব্যবহার করার সময় না থাকলে তা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। য় তবে টিকটক প্রতিপক্ষের নির্দেশনা বা নীতিমালা রয়েছে তা ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। এই নীতিমালা গুলো বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হয়ে থাকে।
টিকটকে প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস থেকে ইনকাম
টিকটকে ফলোয়ারস বাড়ানোর সহজ উপায়
- কোয়ালিটি সম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
- নিয়মিত কনটেন্ট দিতে হবে।
- সঠিক নিস বাছাই করতে হবে।
- ট্রেন্ড ফলো করে কনটেন্ট লিখতে হবে।
- ভিডিওর লেন্থ ১৫-২০ মিনিটের হতে হবে। বেশি বড় বা ছোট হওয়া যাবে না।
- অডিয়েন্সদের সাথে সবসময় এঙ্গেজ থাকতে হবে।
- প্রপার ওয়েতে হ্যাশট্যাগ ও টাইটেল ব্যবহার করতে হবে।
- ভিডিওর এডিটিং খুবই ভালো করে নিখুঁতভাবে করতে হবে।
- ভিডিওর সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো হতে হবে।
- ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক অনেক সুন্দর হতে হবে।
- সেলিব্রেটিদের ক্ষেত্রে ডুয়েট করতে হবে।
- টিকটকে গেম পার্টিসিপেন্ট করতে হবে।
- কন্ট্রোভারশিয়াল ভিডিও বানানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
- কনটেন্ট ড্রাফট করা যাবে না।
টিকটকে কিনে ফেইক ফলোয়ারস না বাড়ানো
ফলোয়ারস কিনে ইনিসিয়ালি কিছু রিচ পাওয়া যাবে। কিন্তু কেনা ফলোয়ার বেশিরভাগই ফেইক হয়।তাই ফেইক ফলোয়ারস থাকলে কয়েকদিন পরে এনগেজমেন্ট ডাউন হয়ে যাবে। তখন ফেইক ফলোয়ারস কেনার টাকাটা লস হয়ে যাবে। তাই কখনোই ফেইক ফলোয়ারস কেনা যাবে না। তাই টিকটকে থেকে সহজে ইনকাম করতে চাইলে অর্গানিক রিচ করাই বেশি ভালো।
টিকটকে এনগেজমেন্ট ডাউন হওয়ার কারণ
- নিয়মিত কনটেন্ট না দেওয়া।
- ফেইক ফলোয়ারস বেশি থাকার কারণে।
- সঠিকভাবে কন্টেন্ট না দেওয়ার কারণে।
ক্যাম্পেইন তৈরি করে উদ্যোক্ত হওয়া
টিকটকে থেকে টাকা ইনকাম করার তৃতীয় উপায় হল ক্যাম্পেইন তৈরি করে উদ্যোক্ত হওয়া। নিজে একজন সফল টিকটকার হয়ে অন্যদের মাধ্যমে সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায়। ক্যাম্পেইন তৈরি করে সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায়।
অন্যদের কনটেন্ট তৈরি শিখিয়ে নিজে উদ্যোক্তা হওয়া যায়। এভাবে ক্যাম্পেইন তৈরি করে তাদের থেকে উপযুক্ত ফি নিয়ে সেখান থেকে আয় করা যায়। এজন্য বিভিন্ন ইউজারদের সাথে অনেক বেশি ফ্রেন্ডলি হতে হবে। তাদেরকে টিকটকে সফল হওয়ার উপায় জানাতে হবে। বিভিন্ন ক্যাম্পেইন, ফ্যান মিটিং করতে হবে। এভাবে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া যাবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url