চুল ভালো রাখতে মাথার উকুন দূর করার ঘরোয়া উপায় জানুন
চুল ভালো রাখতে মাথার উকুন দূর করার ১০টি ঘরোয়া উপায় জানুন
আপনি কি উকুনের যন্ত্রণায় অস্থির? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। চুল ভালো রাখতে মাথার উকুন দূর করার বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
চুল ভালো রাখতে মাথার উপর দূর করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কারণ এটি খুবই অস্বস্তিকর এবং বিরক্তির কারণ। এটি চুল নষ্ট করে দেয়। তাই উকুনের সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া উপায় সহ আরো বিষয় বিস্তারিত জানাবো আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে।
মাথায় উকুন হওয়ার কারণ
মাথায় উকুন হওয়া অস্বাভাবিক কোন বিষয় নয়। কারণ উকুন খুব সহজেই একজনের মাথা থেকে অন্যজনের মাথায় প্রবেশ করে। কারো মাথায় উকুন আছে এমন মানুষের সংস্পর্শে আসলে কোন না কোন ভাবে উকুন আরেকজনের মাথায় সহজে প্রবেশ করে এবং বংশবিস্তার করতে শুরু করে।
তোয়ালে, বিছানা, ক্যাপ বা কভার ইত্যাদির সংস্পর্শে আসলেই উকুন ছড়ায় না। যাদের মাথায় উকুন আছে তাদের মাথা থেকে সহজেই অন্য মাথায় ঢুকলে উকুন দ্রুত ছড়ায়। আবার পুকুর বা বাইরের পানিতে গোসল করলেও দ্রুত ছড়ায়।
প্রাকৃতিক ভাবে উকুন দূর করার উপায়
প্রাকৃতিক উপায় উকুন দূর করতে সময় লাগে ১৫ দিন। প্রথমে চুলকে ভালো করে ভিজিয়ে নিতে হবে তারপর চিকন চিরুনি দিয়ে ভালো করে আঁচড়ে উকুন বের করতে হবে। এভাবে তিন দিন অন্তর অন্তর চুল আঁচড়াতে হবে। এভাবে প্রথম দিন, পঞ্চম দিন, নবম দিন এবং ১৩ তম দিন পর্যন্ত চুল আঁচড়েতে হবে। তিন দিন পর পর এভাবে চুল আঁচড়াতে হবে।
তবে প্রাকৃতিক উপায় উকুন দূর করা সবচেয়ে নিরাপদ এবং ভালো উপায়। এভাবে নিয়মিত পদ্ধতি মেনে চুল আঁচড়ালে উকুন দূর হয়ে যাবে। উকুন চুল এবং মাথা কোন কিছুর জন্য ভালো কিছু নাই। এবং উকুন কোন মানুষের জন্য অস্বস্তিকর এবং বিরক্তির একটি বিষয়।
ভেষজ পদ্ধতিতে উকুন দূর করার উপায়
ভেষজ পদ্ধতিতে উকুন দূর করার উপায় অনেক বেশি কার্যকর নাও হতে পারে। তবুও ব্যবহার করলে কোন সমস্যা নাই। কেউ চাইলেই ব্যবহার করে দেখতে পারে। ভেষজ পদ্ধতিতে উকুন দূর করার উপায়-
আপেল সাইডার ভিনেগারঃ আপেল সাইডার ভিনেগার উকুন দূর করতে সাহায্য করে থাকে। আপেল সাইডার ভিনেগার চুলে ভালো করে মেখে কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিতে হবে। তারপর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। এবার ভালো করে মরা উকুন বা নিক আঁচড়ে ফেলে দিতে হবে।
অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল তেল ভালো করে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে। এভাবে ৩০ মিনিট পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর চিকন চিরুনি দিয়ে আছড়ে মরা উকুন গুলো ফেলে দিতে হবে।
টি ট্রি অয়েলঃ চুলের উকুন দূর করতে টি ট্রি অয়েল এর ব্যবহার ভালো। চা গাছের তেল ভালো করে স্প্রে বোতল দিয়ে পানির সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। এভাবে টি ট্রি অয়েল চুলের সাথে মিশিয়ে তিরিশ মিনিট পর ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
রসুনের রসঃ রসুনের রস উকুনের জন্য অনেক বেশি বিরক্তির কারণ। তাই আট দশটা রসুনের কুয়া ভালো করে পেস্ট করে তার সাথে লেবুর রস মিস করে মাথার চুলে লাগাতে হবে। এবং এভাবে কিছুক্ষণ রেখে ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাহলে উকুন চলে যাবে।
মেয়োনিজঃ মেয়োনিজ চুলের যত্নে অনেক উপকারী। নিয়মিত মেয়োনিজ ব্যবহার করলে চুল ভালো থাকে এবং ঝলমলে উজ্জ্বল হয়। আর তার সাথে উকুনও দূর হয়ে যাবে। তাই চুলের যত্নে মেয়োনিজ অনেক উপকারী।
পেঁয়াজের রসঃ পেঁয়াজ রস করে চুলে লাগালে উকুন দূর হয়ে যায়। কয়েকটা পেঁয়াজ নিয়ে ভালো করে রস বের করে চুলে লাগিয়ে ত্রিশ মিনিট রেখে দিলে উকুন মারা যায়। এবং পরে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর ভালো করে চুল আঁচড়ে মরা উকুন গুলো ফেলে দিতে হবে
ঔষধে উকুন দূর করার উপায়
চুলের তালুতে ভালো করে ওষুধ লাগবে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে তাহলে উকুন দূর হয়ে যাবে। তবে শ্যাম্পু করতে চাইলে ২৪ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করতে হবে। তাহলে ভালো কাজ দিবে। ওষুধ লাগালে উকুন মারা যাওয়ার নিশ্চয়তা অনেক বেশি। উকুন মারার ঔষধের নাম হল-
Alice Lotion
Alice Lotion ছয় মাস থেকে সকল বয়সী মানুষ এই লোশন ব্যবহার করতে পারবে। এই লোশন ব্যবহারের ফলে সব উকুন মারা যাবে। এবং ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এবং ২৪ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
Licnil Lotion
Licnil Lotion সব বয়সী মানুষ ব্যবহার করতে পারবে। ভালো করে চুলের ত্বকে এবং চুলে লাগাতে হবে তারপর 10 মিনিট পর মাথা নিচু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। আর চোখে গেলে ভালো করে চোখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এবং শ্যাম্পু করতে চাইলে ২৪ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করতে হবে। এভাবে Licnil Lotion লাগালে উকুন সব দূর হয়ে যাবে।
ঔষধ ব্যবহারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই ওষুধ অত্যন্ত নিরাপদ একটি ওষুধ। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটি ব্যবহার করা যাবে। তবে গর্ভাবস্থায় বা স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও এই ওষুধ ব্যবহারের ফলে খুশকি হতে পারে। আর চোখে গেলে জ্বালা করলে ধুয়ে ফেললে আর কোন সমস্যা থাকে না।
উকুন ভালো হয়ে যাওয়ার পরের সতর্কতা
উকুন ভালো হয়ে গেল অনেক কারণে আবার উকুন হয়ে যায়। তাই উকুন ভালো হয়ে যাওয়ার পরও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে না চললে আবার উকুন হতে পারে। যেমন-
- বাইরে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চুল অনেক ভালো করে বেঁধে যেতে হবে। যাতে অন্য কারো চুলের সাথে না লাগে। অন্য কারো চুলের সাথে লেগে উকুন চলে আসতে পারে।
- ব্যবহারকৃত চিরুনি ভালো করে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। এবং অন্য কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না।
- বালিশের কভার ভালো করে গরম পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এবং সর্বদা পরিষ্কার থাকতে হবে।
পরিশেষ
উকুন স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনই চুলের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এটি চুলের ক্ষতি করে এবং চুলের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। এবং এটি অস্বস্তিকর এবং যন্ত্রণাদায়ক যা বাইরের মানুষের কাছে বিবৃতি কর অবস্থায় পরতে হয়।
তাই চুল ভালো রাখতে মাথার উপর দূর করা ঘরোয়া উপায় সহ ঔষধি ব্যবহার এবং সতর্কতা সকল বিষয় বিস্তারিত জানতে পারবেন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে। আশা করি যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য একটু হল উপকার হবে। নিয়মিত তথ্যমূলক আরো পোস্ট পেতে www.jarinonline.com ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url