জলপাই খাওয়ার উপকারিতা ও জলপাইয়ের আচার বানানোর রেসিপি
jarinonline
২৯ নভে, ২০২৪
শীতকালের অনেক জনপ্রিয় একটি ফল জলপাই । জলপাই খেতে ছোট বড় সকলেই অনেক বেশি পছন্দ করে। আর এই জলপাইয়ের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন ও উপকারিতা। তাই জলপাই খাওয়ার উপকারিতা ও জলপাইয়ের আচার বানানোর রেসিপি সহ সকল বিষয় জানাবো আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে।
শীতকালে জলপাই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এবং এই সময় জলপাইয়ের দাম অনেক কম থাকে।তাই জলপাই খাওয়ার উপকারিতা এবং জলপাইয়ের আচার বানানো রেসিপি ও কিভাবে সংরক্ষণ করা যায়। বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
জলপাইয়ের পুষ্টিগুন
জলপাই ছোট্ট একটি ফল হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। জলপাই ত্বক ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ নিচে দেওয়া হল।
প্রতি ১০০ গ্রাম জলপাইয়ে রয়েছে-
খাদ্য শক্তি- ১৪৬ কিলোক্যালরি
শর্করা- ১.৬২ গ্রাম
আঁশ- ৩.৩ গ্রাম
আমিষ- ১.০৩ গ্রাম
ভিটামিন ই-৩.৮১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে- ১১.৪ আইইউ
আয়রন- ৩.১ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম- ৫২ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম- ৪২ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম- ১১ মিলিগ্রাম
জলপাই খাওয়ার উপকারিতা
জলপাই খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। তাই জলপাইয়ের মৌসুম শুরু হলে জলপাইয়ের আচার বানিয়ে সংরক্ষণ করে অনেকেই রাখে। আবার মৌসুমে বিভিন্নভাবে জলপাই খেয়ে থাকে। জলপাই খাওয়ার উপকারিতা নিচে দেওয়া হল-
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ জলপাইয়ের হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় । নিয়মিত জলপাই খেলে শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই জলপাই খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ত্বক ভালো রাখতেঃ জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল রয়েছে। যা ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। এবং ত্বকের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
চুল ভালো রাখতেঃ জলপাই চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। জলপায়ে থাকা ফ্যাটি এসিড চুল পরা রোধ করে থাকে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
পিত্ত থলের পাথর হওয়ার প্রবণতা কমায়ঃ জলপাই পিত্তথলির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এবং হজমে সহায়তা করে হলে পিত্তথলির পাথর হওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেঃ ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। জলপাইয়ে থাকা ফাইবার এবং মনোস্যাচুরেটেড ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করার পরিমা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেঃ জলপাই থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এবং জলপায়ে থাকা ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
হাড় ভালো রাখতেঃ জলপাই থাকা ভিটামিন মিনারেল এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। এবং হাড়কে মজবুত করে থাকে।
জলপাইয়ের তেলের উপকারিতা
জলপাই তেল স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি তেল। অনেকেই খাবারে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করে থাকে। জলপাইয়ের তেল সুস্বাস্থ্যে বজায় রাখতে সাহায্য করে। জলপাই খাওয়ার উপকারিতা যেমন অনেক বেশি আবার জলপাইয়ের তেলেও রয়েছে একই রকম উপকারিতা।
জলপাইয়ের তেলে রয়েছে মনোআনস্যাচুরেইটেড চর্বি যা শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং হার্টকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে।
জলপাইয়ের তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। এবং দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
এমনকি জলপাইয়ের তেলে থাকা মনোআনস্যাচুরেইটেড চর্বি স্মৃতিশক্তি এবং জ্ঞানীয় শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।
নিয়মিত খাবারের সঙ্গে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করলে জলপাইয়ের তেল ওজন কমাতে সহায়তা করে থাকে।
বিভিন্ন খাবারের বা সালাদের সাথে জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে খাওয়া যায়। আবার ডায়েট সালাদের সঙ্গেও জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে খাওয়া যায়।
আবার মাছ মাংস মেরিনেট করার সময়ও জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও খাবারের স্বাদ বাড়াতে জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে খাওয়া হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় প্রতিটি জিনিসই খাওয়ার আগে তার উপকারিতা এবং অপকারিতা জেনে তারপর খেতে হবে। কারণ এই সময় যেকোনো সমস্যা হলে বাচ্চা এবং মায়ের দুজনেরই অনেক সমস্যা হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় জলপাই খাবার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন-
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী রক্ত চলাচল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আর গর্ব অবস্থায় জল ফল খেলে গর্ভবতী রক্ত চলে যায় ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে তাই গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া ভালো।
জলপাইয়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ, মিনারেল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের ও বাচ্চার দুজনের জন্যই অনেক বেশি উপকারী। তাই গর্ভাবস্থায় জলপাই খেতে হবে। এবং তা অবশ্যই পরিমাণমতো খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় তাই এ সময় আয়রনযুক্ত খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন। আর জলপাইয়ে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকায় গর্ভাবস্থায় জলপাই খাওয়া যাবে।
জলপাই শিশুদের জন্য অনেক উপকারী। কারণ জলপাইয়ে ভিটামিন সি রয়েছে যা শিশুদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
জলপাইয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। তাই জলপাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী একটি ফল।
শীতকালে জলপাই খাওয়ার উপকারিতা
জলপাই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই সঠিকভাবে জানে না। জলপাই শীতকালীন একটি ফল। শীতকালে প্রচুর পরিমাণে জলপাই পাওয়া যায় এবং কম দামে পাওয়া যায়। আর জলপাইয়ের আচার করে সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়।
জলপাই একটি টক জাতীয় ফল শীতকালে প্রচুর পরিমাণে জলপাই পাওয়া যায় আর এ সময় ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাই। আর জলপাই ভিটামিন সি এর পরিমাণ বেশি থাকায় এ সময় জলপাই বেশি করে খেলে ত্বক এবং চুল ভালো থাকে।
ত্বকে ভিটামিন সি ময়শ্চারাইজার কাজ করে। এছাড়াও জলপায়ের তেল বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। জলপাই তেলে ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকায় এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার। এবং জলপায়ের তেল ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।
জলপাইয়ের আচার বানানোর রেসিপি
জলপাইয়ের আচার খুবই সুস্বাদু একটি আচার। যা ছোট বড় সকলের কাছেই অনেক পছন্দের। তাই জলপাইয়ের মৌসুমে জলপাইয়ের আচার করে সারা বছর সংরক্ষণ করে রাখা যায়। নিচে জলপাইয়ের আচার তৈরির রেসিপি দেওয়া হলো-
আচার তৈরির উপকরণ
জলপাই- ১ কেজি
রসুন কুচি- ৩ টি
ভিনেগার- ১ কাপ
চিনি- স্বাদমতো
লালমরিচ- ৮ টি
সরিষার তেল- হাফ কেজি
হলুদের গুড়া- ১ চামচ
মরিচের গুঁড়া- ১ চামচ
লবণ-স্বাদমতো
দারুচিনি- ২ টি
এলাচ- ২ টি
তেজপাতা- ২ টি
পাঁচফোড়ন- ৩ টেবিল চামচ
যেভাবে আচার তৈরি করতে হবে
প্রথমে জলপাই ভালো করে ধুয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর জলপাইগুলো ভালো করে চটকে নিতে হবে। এবার চটকানো জলপাইয়ের মধ্যে হলুদের গুঁড়া মরিচের গুড়া মিশিয়ে হালকা শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর চুলায় পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে তাতে রসুন কুচি দিয়ে বাদামি করে রসুন ভাজা হলে তাতে শুকিয়ে রাখা জলপাই দিয়ে দিতে হবে।
এরপর একে একে সব মসলা গুলো দিয়ে ভালো করে বাঁচতে হবে এবং স্বাদমতো চিনি দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে পাঁচফোড়নের গুড়ি দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। এবং শেষে অল্প করে ভিনেগার দিলে সারা বছর সংরক্ষণ করা যাবে।
জলপাই খাওয়ার নিয়ম
জলপাই খুবই সুস্বাদু একটি ফল যা ছোট বড় সকলেই খেতে অনেক পছন্দ করে। কিন্তু প্রতিটি খাবার আগে পরিমাণ ও খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খাওয়া উচিত তা নাহলে শরীরে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সর্বদা খাবার পরিমিত এবং জেনে খেতে হবে। জলপাই খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি এবং এটি সারা বছর সংরক্ষণ করে খাওয়া যায়।
জলপাই শীতকালীন একটি ফল এবং শীতে আমাদের শরীরে একটু বেশি ভিটামিনের প্রয়োজন হয় কারণ ত্বক এবং চুলের শারীরিক সুস্থতা ভালো রাখতে ভিটামিন সি সহ সকল উপাদান প্রয়োজন। আর জল পায়ে এ সকল উপাদান বেশি রয়েছে বলে তা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এবং প্রতিদিন একজন ৫ থেকে ১০ জলপাই খেতে পারবে। তার বেশি হলে সমস্যা হতে পারে।
আবার অনেকে বাজার থেকে প্রক্রিয়াজাত আচার কিনে খেতে পছন্দ করে। কিন্তু বাজার থেকে প্রক্রিয়া জাত আচার কেনার আগে আচারের মান ঠিক আছে কিনা তা জেনে এবং বুঝে কিনতে হবে। কারণ অস্বাস্থ্যকর কোন খাবার খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি হতে পারে।
জলপাই খাওয়ার অপকারিতা
প্রতিটা খাবারের উপকারিতা এবং অপকারিতা থাকে। তাই জলপাই খাওয়ারও কিছু অপকারিতা রয়েছে। এবং কোন জিনিস অতিরিক্ত খেলেও তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এমনই জলপাই খাওয়ার ও কিছু অপকারিতা রয়েছে-
এলার্জির সমস্যাঃ কোন কোন মানুষের ক্ষেত্রে জলপাই এলার্জি থাকতে পারে। তাই জলপাই খাওয়ার পরে শরীরে চুলকানি র্যাশ সমস্যা দেখা দিলে জলপাই খাওয়া যাবেনা।
পেটে গ্যাসঃ অতিরিক্ত পরিমাণে জলপাই খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। আবার খাবার অনিয়ম হলে ভরা পেটে খাবার পরে অতিরিক্ত জলপাই খেলেও পেটে গ্যাস হতে পারে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ অনেক ওষুধ আছে যেগুলোর সঙ্গে জলপাই খেলে সমস্যা হতে পারে। যেমন রক্ত পাতলা করা ওষুধ খাওয়ার সময় জলপাই খেলে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
কিডনির সমস্যাঃ কিডনির সমস্যায় ভোগা রোগীদের অতিরিক্ত পরিমাণে পটাশিয়াম ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। তাই জলপাই পটাশিয়াম থাকায় যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে। সেসব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জলপাই না খাওয়া উচিত।
মস্তিষ্কের সমস্যাঃ অতিরিক্ত পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট মস্তিষ্কে ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। আর জলপাইয়ে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকায় অতিরিক্ত জলপাই খেলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে।
জলপাই পাতার প্রতীকি ব্যবহার
জলপাই পাতা শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। এছাড়াও জলপাই পাতাকে বিজয় এবং প্রাচুর্যের প্রতীক বলা হয়ে থাকে। তবে সংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে। জলপাই পাতার এসকল গুণাবলীর পিছনে অনেক ইতিহাস ও ধর্ম বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
শান্তির প্রতীকঃ জলপাই পাতা এবং শাখা বিভিন্ন সভ্যতায় শান্তির প্রতিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা পাওয়া যায়। এবং বাইবেলেও এর উদাহরণ রয়েছে। প্রাচীন এক কাহিনীতে রয়েছে যে এক বন্যার পরে কবুতর জলপাইয়ের পাতা এবং শাখা মুখে করে নিয়ে আসে এতে ধারণা করা হয় যে এটি ঈশ্বর কৃতক শান্তির বাণী এবং বন্যার সমাপ্তির প্রতীক হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। সেই থেকেই জলপাইয়ের পাতা এবং শাখা শান্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বিজয়ের প্রতিকঃ প্রাচীন গ্রিসে জলপাইয়ের পাতা ও শাখা বিজয়ের এবং সম্মান প্রদর্শনের প্রতিক হিসেবে ব্যবহার করা হতো। প্রাচীন অলিম্পিক গেমসের বিজয়ীদের মাথায় জলপাইয়ের শাখার মুকুট পড়ানো হতো। এটির মাধ্যমে তারা তাদের গৌরব ও সম্মানের পরিচায়ক বহন করত।
প্রাচুর্যের প্রতীকঃ প্রাচীনকাল থেকেই জলপাই গাছ প্রাচুর্যের ও উর্বরতা প্রতি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। কারণ জলপাইয়ের তেল প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে খুবই মূল্যবান ছিল এবং এটি অর্থনৈতিকভাবে খুবই সমৃদ্ধশালী একটি গাছ ছিল। যা থেকে মানুষ অনেক অর্থ উপার্জন করত। তাই জলপাইয়ের গাছ কে প্রাচুর্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হত।
ধর্মের প্রতিকঃ ইসলাম ধর্মেও জলপাই গাছ কে পবিত্র বলে মনে করা হয়। এছাড়াও আলকুরআনে সূরা
আন-নূরে জলপাই গেছে উল্লেখ পাওয়া যায়। যা আলোকিততার প্রতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া খ্রিস্টীয় ধর্মীয় জলপাইয়ের গাছ ও শাখা কে ঈশ্বরী ও আশীর্বাদ ও আসার প্রতি হিসেবে ভাবা হয়। এবং বাইবেলের গল্পে রয়েছে যে জলপাই গাছ মানব জাতির পূর্ণ মিলনের প্রতীক।
পরিশেষে
জলপাই পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি টক জাতীয় শীতকালীন ফল। তাই জলপাই খাওয়ার উপকারিতা অনেক। এবং জলপাইয়ের আচার বানিয়ে সারা বছর সংরক্ষণ করে রাখা যায়। জলপাইর আচার খেতে ছোট বড় সকলেই অনেক বেশি পছন্দ করে। এবং এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল যা ত্বক এবং চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।
জলপাই খাওয়ার উপকারিতা এবং জলপাইয়ের আচার বানানোর রেসিপি সহ জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ সকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হলো আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে। জলপাই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন পুরো আর্টিকেলটি পড়ে। নিয়মিত তথ্যমূলক আরো পোস্ট পেতে www.jarinonline.com ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url