রক্তস্বল্পতা দূর করার ঘরোয়া উপায়
আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জানতে পারবেন রক্তস্বল্পতা পূরণে কি করা উচিত সহ রক্তস্বল্পতার জন্য অনেক বিস্তারিত সমাধান। তাই বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে হলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
রক্তস্বল্পতা কি
রক্তস্বল্পতাকে অনেক সময় রক্তশূন্যতাও বলা হয়। এই রক্তশূন্যতা মানে হল যেখানে রক্ত লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিন সাধারন অংশের তুলনায় কম থাকে তখন তাকে স্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা বলা হয় এছাড়াও বলা যায় রক্তের মধ্যে যখন অক্সিজেন তলা দূর করতে বাধা পায় তখন রক্ত সল্পতা বা রক্তশূন্যতা হয়।
শরীরের মধ্যে রক্তশূন্যতা ধীরে ধীরে তৈরি হয় যার অনেকগুলো লক্ষণ মানুষ বুঝতে সক্ষম হয় না। কিন্তু অনেকগুলো লক্ষ্য নেই দেখা যায় রক্তশূন্যতা তৈরি হলো। লক্ষণ গুলো হল ক্লান্তিবোধ মাথা ঘোড়া দুর্বলতা শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি এ ধরনের সমস্যা মাঝে মাঝে দেখা দেয় রক্তশূন্যতা তৈরি হলে।
আবার অনেকের শরীরে দেখা দেয় রক্তস্বল্পতা অনেক দ্রুত তৈরি হলে অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় সেগুলো হল অজ্ঞান হয়ে যাওয়া দুর্বলতা অনুভব করা। স্বাভাবিক চেতনা কমে যাওয়া এছাড়াও অনেক পিপাসা সৃষ্টি হবে যদি দ্রুত রক্তস্বল্পতা তৈরি হয় মানব শরীরে।
অনেকেই এই সময়ে রক্তস্বল্পতা পূরণে কোন খাবার খাওয়া উচিত এই নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে। তবে হাতের কাছে থাকা কয়েকটি খাবার নিয়মিত খেলে এই সমস্যা থেকে ঘরোয়া ভাবে রেহাই পাওয়া যায়। অনেক মানুষই এই ধরনের সমস্যার সমাধানের খুঁজতে থাকে।
রক্তস্বল্পতার একটি বড় রোগ হলো অ্যানিমিয়া। অ্যানিমিয়া হলে মানুষ দেহে অনেক তাড়াতাড়ি রক্ত কমে যেতে শুরু করে আর সেই সময় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় অনেক মানুষকে।
রক্তস্বল্পতা দূর করার ঘরোয়া উপায়
- কমলা
- ডালিম
- লেবু
- গোল মরিচ
- টমেটো
- স্ট্রবেরি
- কমলা
- গরুর কলিজা
- গরুর মাংস
- দুধ
- ডিম
- আপেল
- আঙ্গুর
- বিটরুট
- ব্রকলি
রক্তস্বল্পতার কারণ
বিভিন্ন কারণে মানুষের শরীরে রক্তস্বল্পতা বা রক্তিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম হয়। এছাড়াও রক্তস্বল্পতা পূরণে কি করা উচিত। বিভিন্ন কারণে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয় বাংলাদেশে প্রায় অধিকাংশ মানুষ। প্রথমত এই সমস্যার কারণ হচ্ছে অপুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা।
বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যাদের পুষ্টিকর খাবার অথবা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার উপায় থাকে না তারা এ ধরনের সমস্যার বেশি সম্মুখীন হয়। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের কারণ রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে রক্ত সল্পতা সৃষ্টি হতে পারে।
এই কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি কারণ নিচে দেওয়া হল-
- অস্থিমজ্জার রোগ থাকলে মানুষের শরীরে রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিন সৃষ্টি হতে পারে না তখন রক্তস্বল্পতা তৈরি হয়।
- প্রথমত আয়রনের অভাবে শরীরের রক্তস্বল্পতা আমরা অ্যানিমিয়া তৈরি হয়। এর প্রধানত কারণ হলো শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন না থাকে তাহলে রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিন সৃষ্টি হতে পারে না আর সেখান থেকে রক্তস্বল্পতা সৃষ্টি হয়।
- অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও মানুষের শরীরে রক্তস্বল্পতা তৈরি হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে রক্তের সাথে আয়রন মিশ্রিত হয় এবং শরীরের মধ্যে আয়রনের অভাব সৃষ্টি হয় তখন হিমোগ্লোবিন তৈরি হতে পারে না। এর ফলে অ্যানিমিয়ার মতন রোগ তৈরি হয়।
- জিনগত রোগ থাকলে অর থ্যালাসেমিয়া চিকেন সেল ইছাড়াও অ্যানিমিয়া ইত্যাদির জিনগত রোগ যা মানুষ বংশ ভেদে পায়।
- ভিটামিন বি ১২ এবং প্লেটের অভাব থাকলে মানুষের শরীরে রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিন তৈরি হতে পারে না এবং শরীরের রক্তস্বল্পতা তৈরি হয়।
রক্তস্বল্পতার লক্ষণ
- ক্লান্তি
- মাথা ঘোরা
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- চামড়া ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
- ঠান্ডা অনুভব করা
- মাথা ব্যথা করা
- কানে বাজানো শব্দ
- হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি হওয়া
- শ্বাসকষ্ট তৈরি হওয়া
রক্তস্বল্পতা নিরাময়ে করণীয়
রক্তস্বল্পতা পূরণে কোন খাবার খাওয়া উচিত
প্রতিদিন আয়রন সমৃদ্ধ মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এর কারণ হলো রক্তস্বল্পতা শরীরের মধ্যে থেকে পূরণ হয়। এছাড়াও অনেকে চিন্তা করে রক্তস্বল্পতা পূরণে কি করা উচিত। আশেপাশে অনেক ধরনের খাবার আছে যা খেলে রক্তস্বল্পতা পূরণ করা যায় এমন কয়েকটি খাবারের নাম হল-
পালং শাকঃ বিশেষজ্ঞদের মতে পালং শাকে থাকা প্রয়োজনীয় উপাদান সমূহ রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য মানবদেহে অত্যন্ত কার্যকরি একটি খাবার।
কলিজাঃ আয়রনের অভাবজনিত সমস্যা হলো রক্তস্বল্পতা মানবদেহে যখন আয়রনের ঘাটতি হয় তখন রক্তস্বল্পতা তৈরি হয় কলিজার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন বি যা রক্তস্বল্পতা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
খাসির মাংসঃ খাসির মাংসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যাদের রক্ স্বল্পতার সমস্যা আছে তারা নিশ্চিন্তে খাসির মাংস খেতে পারে।
মাছঃ মাছের মধ্যেই প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে যা মানব দেহে রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য অনেক বেশি উপযোগী একটি খাবার। তবে সামুদ্রিক মাছে বেশি আয়রন থাকে তাই রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য সামুদ্রিক মাছ বেশি করে খাওয়া উচিত।
ফলমূলঃ ফলমূল খেলে মানুষের শরীরে অনেক বেশি উপকার হয় এর পাশাপাশি ফলগুলো থাকা ভিটামিন বি এবং আয়রন রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য অনেক ভালো কাজ করে।
সয়াবিনঃ সয়াবিনের প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে যা মানব দেহে রক্তসল্পতা পূরণের জন্য অনেক ভালো কাজ করে।
ডালঃ রক্তস্বল্পতা গ্রহণ করতে চাইলে প্রতিদিন খাদ্য তালিকার মধ্যে মসুর ডাল কিংবা মুগ ডাল রাখা উচিত প্রতিদিন ডাল খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকবে এবং রক্তস্বল্পতা তৈরি হবে না।
খেজুরঃ খেজুর একটি মজার খাবার খেতে যেমন দুঃস্বাদু ঠিক তেমনি এর মধ্যে অনেক ভালো উপাদান পাওয়া যায় যা মানব দেহে অনেক ভালো কাজ করে।
বিটরুটঃবিটরুট অনেক সুস্বাদু এবং অনেক উপকারী একটি খাবার । এটি খেলে রক্তস্বল্প নিরাময় হয়।
টমেটোঃ টমেটো অনেক উপকারী এবং মজার একটি খাবার অনেকে টমেটো কাঁচা হিসেবে খায় আবার অনেকে রান্না করে তবে যেভাবে খাওয়া হোক না কেন টমেটো অনেক ভালো গুণাগুণ রয়েছে জানানোর দেহে রক্তস্বল্পতা পূরণে কাজ করে।
রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে করনীয়
- সুষম খাদ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত আইরন ভিটামিন বি এবং ফলেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন পালং শাক চিংড়ি মাছ মাছ মাংস ডিম দুদ এই ধরনের খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে রক্তস্বল্পতা তৈরি হবে না মানুষের শরীরে।
- নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে কোথায় যাবে শরীরের মধ্যে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে কিনা।
- রক্তক্ষরণ রোধ করা উচিত মানবদেহে বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হতে পারে রক্তক্ষরণ। যদি কোন কারনে মানবদেহে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি হয় তাহলে যত সম্ভব দ্রুত সম্ভব সে রক্তক্ষরণ রোধ করা উচিত। তাহলে শরীরের রক্ত কমে যাবে না।
- জীবনযাত্রা পরিবর্তন করতে হয় কারণ মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু এই খাদ্য গ্রহণ যেমন মদ্যপান ধূমপান ইত্যাদি নেশাগ্রস্ত খাবার এর জন্য শরীরে রক্তস্বল্পতা তৈরি হতে পারে।
রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে রক্তস্বল্পতা পূরণে কি করা উচিত ।মানবদেহে রক্তস্বল্পতা তৈরি হলে প্রথমে তা নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করতে হয় কেননা রক্তস্বল্পতা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে তাই কোন ধরনের রক্ত স্বল্পতা তৈরি হয়েছে তা আগে ভালোভাবে নিশ্চিত করতে তারপর সে অনুসারে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। তাহলে খুব দ্রুত সমাধান পাওয়া যাবে।
তীব্র রক্তক্ষরণ হলে মানুষের শরীরে কোষ শনাক্তকরণ করে প্যাক কোষ ট্রান্সলেশন এর মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী রক্তক্ষরণ এর জন্য রক্ত দান করতে হয়। তবে রক্তদান করলে সমস্যা একেবারে নির্মূল হয় না এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।
মানবদেহে বিভিন্ন কারনে রক্তক্ষরণ তৈরি হতে পারে যদি কোন কারণবশত রক্তক্ষরণ সৃষ্টি হয় তাহলে সেই রক্তক্ষরণ যত দ্রুত সম্ভব কমাতে হবে। তা না হলে রক্তস্বল্পতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়াবে রক্তক্ষরণ। তখন রোগীকে আলাদাভাবে রক্তদান করতে হবে।
অনেক মানুষ প্রয়োজনের বেশি ধূমপান করে থাকে কোন ক্ষেত্রেই ধূমপান করা উচিত না ধূমপান করলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হয় তার মধ্যে রক্তস্বল্পতা একটি অন্যতম কারণ।। মানুষ যখন অতিরিক্ত ধূমপান শুরু করে তখন তার শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়।
নেশা জাতীয় খাদ্য মানুষের শরীরে অনেক মারাত্মক প্রভাব ফেলে এজন্য সর্বপ্রকার নেশা পরিত্যাগ করা উচিত সব ধরনের মানুষের এছাড়াও এ রোগের বিভিন্ন ধরনের হতে পারে কেন থেরাপি অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন ইত্যাদি এই ধরনের সমস্যার জন্যই মানবদেহের রক্তস্বল্পতা তৈরি হতে পারে।
রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ
রক্তস্বল্পতাকে অ্যানিমিয়া বলা হয় এই অসুখটি সাধারণ মানুষের জন্য অনেক বেশি মারাত্মক হয়ে দাঁড়ায়। এর কারণ হলো রক্তস্বল্পতা মানব দেহে তৈরি হলে কখনো কখনো আলাদাভাবে রক্ত দিতে হয় আবার কখনো ভালো বন্ধু খাবার খেয়ে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
রক্তস্বল্পতা পূরণে কি করা উচিত তা থেকেই জানতে চাই অনেক মানুষ ঘরোয়া উপায়ে রক্তস্বল্পতা পূরণ করতে চাই তাদের জন্য কিছু উপায় আছে যেগুলো উপরে বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও অনেক মানুষ রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ খাওয়ার চেষ্টা করে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই।
রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য কয়েকটি ওষুধের নাম নিচে লেখা হলো।
অ্যানিমিয়ার জন্য আয়রন সাপ্লিমেন্টঃ আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তস্বল্পতা তৈরি হয় মানবদেহে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অনেকেই অ্যানিমিয়া হলে আইরন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করে। এতে ফলিক এসিড লৌহ সহ আয়রন থাকে যা রক্তস্বল্পতা পূরণে কার্যকরী।
ভিটামিন বি ১২ঃ ভিটামিন বি ১২ হলো রক্তের লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি। যখন মানবদেহে রক্তশূন্যতা তৈরি হয় তখন ডাক্তাররা ভিটামিন বি১২দেয়।
ফলিক এসিডঃ ফলিক এসিড ভিটামিন ডি লাইন নামেও পরিচিত। রক্তের মধ্যে লোহিত রক্তকণিকা ঘাটতি সৃষ্টি হলে ফলিক অ্যাসিড বা ভিটামিন বি নাইন দেওয়া হয়
ইনজেকশনযোগ্য আয়রনঃ যখন মানবদেহে অতিরিক্ত পরিমাণে রক্তস্বল্পতা তৈরি হয় তখন অনেকেই জানতে চায় রক্তস্বল্পতা পূরণে কি করা উচিত তবে অতিরিক্ত মাত্রায় হয়ে গেলে ডাক্তাররা ইঞ্জেকশন এর মাধ্যমে চিকিৎসা তৈরি করে এতে করে খুব দ্রুত সমস্যা থেকে সমাধানে আসা যায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url